এবার ইউক্রেনকে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে আলাপকালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
ইউক্রেনের প্রতি পুনরায় সমর্থন জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনে রুশ হামলায় ১৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় রাশিয়া অবশ্যই দায়বদ্ধ। এ বিষয়ে আলোচনা করতে জি৭-এর জরুরি বৈঠকের আগে জেলেনস্কির সঙ্গে ফোন কলে বাইডেন এই প্রতিশ্রুতি দেন।
ইউক্রেনকে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ আত্মরক্ষার জন্য সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতেও এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে রাশিয়ার হামলা থেকে রক্ষা করতে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার কথা জানায় জার্মানি। চারটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে প্রথমটি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সরবরাহ করা হবে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখট নিশ্চিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে ল্যামব্রেখট জানিয়েছেন, কিয়েভজুড়ে নতুন করে যে হামলা হয়েছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে ইউক্রেনের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা জরুরি।
তিনি বলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় বেসামরিক নাগরিকরা হতাহত হচ্ছেন। সেজন্যই এখন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে দেশটিকে সহযোগিতা করা হবে।
সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে এখন পর্যন্ত ১৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও বহু মানুষ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ট সহযোগী রোস্তিস্লাভ সিরনভ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তাছাড়া কিয়েভে অবস্থিত জার্মানির দূতাবাসেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, শহরের বেশ কিছু অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, রুশ সন্ত্রাসীরা রাজধানীতে হামলা চালিয়েছে।
রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য অনেক শহরের বেসামরিক এলাকায় হামালা চালানো হয়েছে। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনিই এসব হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার তৈরি একটি সেতুর বিস্ফোরণের জন্য তিনি ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন এবং বলেছেন ওই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে।
যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহানাত বলেছেন, রাশিয়া ৮৩টি মিসাইল ছুঁড়েছে এবং ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এর মধ্যে ৪৩টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। তিনি জানান, কালিবার, ইস্কান্দার এবং কেএইচ-১০১ মিসাইলগুলো ক্যাস্পিয়ান এবং কৃষ্ণ সাগর থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
এ ধরনের সিরিজ হামলা প্রতিরোধ করতে আধুনিক পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা হাতে পাওয়ার জন্য মিত্র দেশগুলোকে ইউক্রেন আরও জোরদার আহ্বান জানাবে। অপরদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের তথ্য মতে, তাদের ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমসের প্রথম চালান নভেম্বরের শেষের দিকে ইউক্রেনে যাওয়ার কথা।