বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও ঝানু রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে তার বয়স ৯৭ বছর।
মঙ্গলবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন মাহাথির; এবং বলেন, মালয়েশিয়ায় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) বিরোধী বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক জোটের প্রার্থী হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তিনি।
নির্বাচনে জয়ী হলে ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মাহাথির বলেন, ‘আমরা এখনও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। কারণ এই প্রশ্ন তখনই প্রাসঙ্গিক হবে, যখন নির্বাচনে আমাদের জোট জিতবে।’
সরকারি তহবিল ওয়ান এমডিবি তছরুপসহ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বর্তমানে টালমাটাল অবস্থায় আছে মালয়েশিয়ার সরকার। এই পরিস্থিতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকব আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিল এখনও ঘোষণা করা হয়নি, তবে সোমবারই পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
মাহাথির মোহাম্মদকে বলা হয় আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি। পেশায় চিকিৎসক এই রাজনৈতিক নেতা ১৯৬৪ সালে প্রথম মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য হন, এবং ১৯৮১ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তারপর প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পর ২০০৩ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নেন তিনি।
কিন্তু মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর ২০১৮ সালে অবসর ছেড়ে ফের রাজনীতিতে আসেন মাহাথির এবং ওই বছরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথও নেন; কিন্তু জোটের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ২০২০ সালে সেই সরকারের পতন ঘটে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল মাহাথির মোহাম্মদকে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ার কয়েক মাস পর, আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হন মাহাথির।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে মাত্র এক মাস আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন মাহাথির। তবে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শারীরিক সুস্থতা এখনও রয়েছে তার।
সূত্র: বিবিসি