আগামী ২০২৩ সালের জন্য বিশ্বকে খাদ্য, জ্বালানি তেলসহ মহামন্দার বিষয়ে সতর্ক করছে বিশ্বব্যাংক। এবার এ মহামন্দা ঠেকাতে ও দুর্ভিক্ষ কাটাতে ১৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সম্মেলনের পঞ্চমদিনে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এ তথ্য জানান বিশ্বব্যাংক প্রধান ও আইএমএফ এমডি।
বিশ্বব্যাংক জানায়— বৈশ্বিক মন্দার কবলে পড়লে বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বে। তবে, বিশ্বমন্দার আগেই বর্তমানে বিশ্বে ৪৮টি দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে। বিশেষ করে, কোস্টারিকা, বসনিয়া ও রুয়ান্ডার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
সংস্থাটি জানায়— করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর মোড়ল দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা বিশ্বকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এরই মধ্যে এ সংকটের আঁচ লেগেছে ছোট-বড় সব অর্থনীতির দেশের। এতে করে জ্বালানি তেলের চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হবে। এ সংকট থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকার প্রধানদের সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
মহামন্দাও দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে সহযোগী দেশগুলোর জন্য ১৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছে বিশ্বব্যাংক। যার মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হবে কেবল খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বলছে— সংকটে পড়ে সমাধানের চেষ্টা করার চেয়ে সরকার প্রধানদের উচিৎ আগেই সতর্ক হওয়া।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা মনে করেন বিশ্ব নেতাদের নির্লিপ্ততা বিশ্ববাসীকে মহাসংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বছর দুয়েক আগেও বিশ্বজুড়ে শান্তি ছিল। মূল্যস্ফীতি, সুদের হার নিয়ে কোনো চাপ ছিল না। সে অবস্থা থেকে আমরা চরম অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছি। ভূ-রাজনৈতিক সংকট আর সংঘাত পুরো বিপদজনক অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে। তবে সংকট এড়াতে বিশ্বের মোড়ল দেশগুলো হাত গুটিয়ে থাকলেও বিশ্বব্যাংক তার সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, সংকট মোকাবিলায় আগামী ১৫ মাসে ১৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। যার মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে খাদ্য নিরাপত্তায়। এছাড়া বেসরকারিখাতকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা দেবে আইএমএফ।