ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাত থেকে বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে বিকল্প উপায়ে শনিবার সকালে থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে সমাবেশ এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জেলা মোটর মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। তাই গণপরিবহনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শনিবার ময়মনসিংহে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গণসমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতেই সরকারের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহন মালিকরা। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জরুরি কাজ থাকলেও তারা যেতে পারছেন না নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
জিয়াউল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়া খুব দরকার ছিল। এজন্য ভোর ৪টায় আমি মাসকান্দা বাস টার্মিনালে যাই। তবে গিয়ে দেখি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। কোনো উপায় না পেয়ে ফিরে আসতে হলো।
এদিকে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের জন্য ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাস মাঠে প্রস্তুত হয়েছে মঞ্চ। দুপুর ২টায় সমাবেশের সময় নির্ধারিত থাকলেও শনিবার ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে হাজির হয়েছেন। অনেকে মঞ্চের সামনের মাঠ দখলে রাখতে প্রখর রোদের মধ্যে অবস্থান নিয়েছেন।
এছাড়া বেশির ভাগ নেতাকর্মী পাশের সড়কসহ আশপাশে অবস্থান করছেন। পথে বাধা পেরিয়ে আসা নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেছেন সমাবেশস্থলে। বর্তমানে নগরীর চরপাড়া ও মাসকান্দা এলাকা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দখলে।
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দূরপাল্লার বাস। এতে ভেঙে ভেঙে ছোট ছোট যানবাহন দিয়ে আসতে হয়েছে তাদের। তবুও পথে পথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নূরে আলম ও আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিমসহ পাঁচজনকে হত্যার প্রতিবাদে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এই গণসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।
গত ৬ অক্টোবর ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি চায় দলটি। তবে প্রশাসন অনুমতি না দিয়ে সমাবেশের জন্য পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্রাবাস মাঠ নির্ধারণ করে দেয়।