সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা আট হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এর উৎস ও মালিকদের তথ্য জানতে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন (এইওআই) চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে জানা যাবে অ্যাকাউন্টধারীর সব তথ্য।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এইওআই চুক্তি হবে পাচারের টাকা দেশে ফেরানোর হাতিয়ার।
সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের আন্তর্জাতিক ফোরাম- এগমন্ড গ্রুপের মাধ্যমে দফায় দফায় ৬৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তথ্য চাওয়া হলেও মিলেছে মাত্র একজনের তথ্য। তাও আবার পাওয়া তথ্য ব্যবহারে আছে নানা জটিলতা। এবার তাই ভারতসহ বিশ্বের ৯০টি দেশের মতো সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে এইওআই চুক্তি করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিআইএফউ, এনবিআর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুদকসহ রাষ্ট্রের ৮টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ চুক্তির আওতায় প্রবাসী ও দেশীয় সংস্থার প্রায় ৩৪ লাখ সুইস ব্যাংক হিসাবের তথ্য ভারত সরকারকে দেয় সুইস সরকার। যেখানে অ্যাকাউন্টধারীর নাম-ঠিকানাসহ আছে বিস্তারিত তথ্য। তাই অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া হাজার কোটি টাকার সন্ধান পেতে ও পাচারকারীদের তথ্য জানতে অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন চুক্তি মাইলফলক হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান গণমাধ্যমকে জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে। টাকা আনার ব্যাপারে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করতে সোচ্চার বাংলাদেশ। এই বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, এই চুক্তি করে ভারত সরকার যেমন সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশও যেন এমন সুফল পায়, সে জন্য এখনি সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল নাগাদ, মাত্র ৫ বছরে দেশ থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু ২০১৫ সালে এক বছরেই পাচার হয় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচার হওয়া টাকার পরিমাণ বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বাংলাদেশ।