প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বকে শিশুদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শান্তি ফিরে আসুক, এটাই তাঁর প্রত্যাশা। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী চাই, যুদ্ধ চাই না। ধ্বংসযজ্ঞ, অস্ত্র ব্যবসা, কোনো শিশুকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করা এবং কাউকে গুলি করে হত্যা করা হোক, তা চাই না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর ছোট ভাই ও জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দিবস-২০০২’-এর উদ্বোধনী এবং ‘শেখ রাসেল পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আস্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এই আয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে ১৯টি ক্যু হয়। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে হাজারো অফিসার, সৈনিককে হত্যা করা হয়। স্বজনরা লাশও পায়নি, গুম করে ফেলা হ। আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মী তখন নির্যাতিত হন, কারাভোগ ও মৃত্যুবরণ করেন। স্বজন হারানোর কান্না আর শুনতে চাই না।
তিনি বলেন, আমরা চাই প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ সুন্দর, উন্নত হোক। পাঁচ হাজার কম্পিউটার ল্যাব ও ৩০০ টি স্কুল অফ ফিউচার উদ্বোধন করলাম। এর আগে আরো আট হাজার করেছিলাম, প্রায় ১৩ হাজার ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে। সারাদেশে ছেলেমেয়েদের আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা দেওয়া, ডিজিটাল দেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য ছিল।
তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের কর্ণধার। তারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে। কোনো মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয়, কোনো শিশু যেন নির্যাতিত না হয়। প্রত্যেকেই যেন সুন্দর জীবন পায়, সেটাই চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সম্পাদিত ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর লেখা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রের ট্রেলারও প্রদর্শিত হয়। এতে জুনাইদ আহমেদ পলক সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিজয়ীদের মধ্যে ‘শেখ রাসেল পদক-২০২২’ বিতরণ করেন। শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী কুইজ, ক্রীড়া, শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদেরকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের উপর ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং আইসিটি বিভাগের নির্মিত থিম সং পরিবেশিত হয়। পরে শিশুদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন আজ।