নতুন আইন পাসের মাধ্যমে ‘ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন’ মামলার বাদীর ‘চরিত্রহনন’ বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে ‘এভিডেন্স (অ্যামান্ডমেন্ট) বিল-২০২২’ নিয়ে আলোচনা শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংসদে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল মজিদ খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার ও বেগম খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, গত ৩১ আগস্ট সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। সংসদে উত্থাপিত বিলে বিদ্যমান আইনের ১৫৫(৪) ধারা বাতিল করা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা।
ওই আইনের ১৪৬(৩) ধারায় বলা হয়েছে, তার চরিত্রের প্রতি আঘাত করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা যায়। যদিও এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হতে পারেন, কিংবা তিনি দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হতে পারে, অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবুও এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে। এই ধারাটি সংশোধনে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না।
এছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে। কেউ যেন ভুয়া বা জাল সাক্ষ্যপ্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে। কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে বলে আদালত মনে করলে, অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে। উত্থাপিত বিলে এমন বিধান রাখা হয়েছে।