বলা হয়ে থাকে, স্বাধীনতা সংগ্রামের ফসল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। দেশটির আইনও তত্ত্বগতভাবে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার পক্ষে। তবে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক সূচকে মানের যে অবনতি গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতও এর বাইরে নয়। দেশটিতে মাঝেমধ্যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঘটা অগ্রহণযোগ্য ঘটনা সংবাদমাধ্যমের যথাযথ স্বাধীনতার অভাব সামনে নিয়ে আসে।
ভারতে সাংবাদিককে হেনস্থা, বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া ও তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের কথা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের’ ২০২২ সালের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী ভারত শাসিত কাশ্মীরের চিত্র সাংবাদিক সানা ইরশাদ মাত্তুকে এবার যুুক্তরাষ্ট্রে যেতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বিষয়গুলো আবার আলোচনা এসেছে। দিল্লির বিমানবন্দর থেকে সানাকে যুক্তরাষ্ট্র যেতে দেয়নি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
দুঃখজনক হলেও সত্য, মাত্র চারমাসের মধ্যে একই ঘটনা দ্বিতীয়বারের মতো ঘটলো এ সাংবাদিকের সঙ্গে। কোভিড-১৯ অতিমারিতে বিশেষ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিৎজার পুরস্কারের জন্য তিনি মনোনীত হন। পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছিলেন। এর আগে বই প্রকাশ ও চিত্র প্রদর্শনীতে যোগ দিতে জুলাই মাসে তাঁকে প্যারিসে যেতে দেওয়া হয়নি।
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে আজ বুধবার প্রচারিত এক প্রতিবেদন বলছে, কাশ্মীরের কয়েক সাংবাদিকের বিদেশ যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। সেই তালিকাতে সানার নাম আছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। এ বছর বেশ কয়েক সাংবাদিককে ভারত থেকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
‘সাংবাদিকতার নোবেল’ খ্যাত সম্মানজনক পুরস্কার পুলিৎজার। সানার এ পুরস্কার অর্জন ভারতীয় সাংবাদিকতার জন্যও গৌরবের। সাংবাদিকতায় অর্জনের স্বীকৃতি সম্পর্কিত অনুষ্ঠানে কারো অংশ নেওয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যে কোনো গণতান্ত্রিক সমাজের পূর্বশর্ত। যা আমরা কখনোই অগ্রাহ্য করতে পারি না। আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলবো, তাঁকে বিদেশে যেতে দেওয়া হোক।