দেশের মধ্যে ডলার সংকট চরমে। এ সংকট দূর করতে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এতেই টান পড়ছে রিজার্ভে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ৩৫ বিলিয়নে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে ৬০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর এতেই রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে। এ নিয়ে চলতি অর্থবছর মোট সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৬৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে (প্রথম তিন মাস) যেখানে এসেছিল ৫৪০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। তারও আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্সে এসেছে ৬৭১ কোটি ৩২ লাখ ডলার। করোনার মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
সম্প্রতি ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর হার কমেছে, হুন্ডির মাধ্যমে বেশি আসছে রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্স কমায় সার্বিক অর্থনীতিতে চোখ রাঙাচ্ছে ‘ডলার সংকট’। এ সংকট সরাসরি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর প্রভাব ফেলছে। সংকট কমার পরিবর্তে ধীরে ধীরে প্রকট আকার ধারণ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ ডলার সরবরাহ করে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। সহসাই এ সমস্যার সমাধান না হলে আগামীতে দেশের অর্থনীতি আরও বড় সমস্যার মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩০০ কোটি ডলার বা ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে তা ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ২০০১-০২ অর্থবছর পর্যন্ত রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারে (প্রায় ২০০ কোটি ডলার)। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বৈশ্বিক মন্দা হলে রিজার্ভ ৭ বিলিয়ন থেকে কমে ৫ বিলিয়নে নেমে আসে। এরপর ধীরে ধীরে আবারও বাড়তে থাকে। সবশেষ গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় রিজার্ভ। এখন তা কমে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।