আজিমপুরে উদ্বোধন হলো ঢাকা দক্ষিণের চতুর্থ কৃষকের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আজিমপুরে কৃষকের বাজার। সংগৃহীত ছবি

কৃষকদের নিরাপদ চাষে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি এবং ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ সবজি-ফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আজিমপুরে উদ্বোধন হয়েছে ঢাকা দক্ষিণের চতুর্থ কৃষকের বাজার।

নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধন করা হয়।

universel cardiac hospital

আজিমপুর রোডে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সামনে আয়োজিত কৃষকের বাজারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাভারের ভাকুর্তা থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাই করা ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল বিক্রি করবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর আমরা এখন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষকের বাজার এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকরী অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কৃষকের বাজার কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং কৃষকদের যেন স্থানীয় হকার বা দোকানিদের থেকে কোনো ধরনের অনিরাপদ পরিস্থিতির শিকার না হতে হয়, সে বিষয়ে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, সবজি চাষে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি মাটি, পানি, বায়ু দূষিত হয় এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশব্যাপী কৃষকদের সবজি চাষে জৈব সার প্রয়োগ এবং পোকা দমনে ফেরোমেন ফাঁদ, আঠালো ফাঁদ ইত্যাদি ব্যবহারে উৎসাহী করছে। কৃষকদের বাজার ব্যবস্থাপনায় সেভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় তারা পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কৃষকের বাজারের মতো উদ্যোগগুলো কৃষকদের লাভবান করবে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বিশ্বব্যাপী নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় আমরা এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কাউন্সিলর কার্যালয়ের সহযোগিতা ছাড়া এ কার্যক্রম সফল করা সম্ভব নয়। কৃষকদের টয়লেট, পানিসহ প্রয়োজনীয় সুবিধাদি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য কাউন্সিলরদের অনুরোধ জানাই।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে আমাদের জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। বিশেষত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। পাশাপাশি ছাদবাগান তৈরিতেও আমাদের জনগণকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এতে একদিকে যেমন নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে, তেমনি নগর অঞ্চলে তাপমাত্রা হ্রাসেও ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন