বান্দরবান ও রাঙামাটির দুর্গম এলাকায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) একাধিক প্রশিক্ষণশিবিরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫০ জনের অধিক জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র–গুলিসহ সাত জঙ্গি ও তিন কেএনএফ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রশিক্ষণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের জঙ্গি সংগঠনের আমিরের নাম ও শূরা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ছয়জনের নাম জানা গেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে বান্দরবান জেলা পরিষদের মিলনায়তনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১০ অক্টোবর কেএনএফ ও জঙ্গিদের একটি গোপন আস্তানা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তখন থেকে চলমান অভিযানে গতকাল রাতে সাইজামপাড়া থেকে সাতজন জঙ্গি ও রোয়াংছড়ি বাজার এলাকা থেকে তিনজন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার জঙ্গিরা হলেন পিরোজপুরের শাহ আলমের ছেলে ইমরান হোসাইন ওরফে শাওন (৩১), সুনামগঞ্জের মৃত সৈয়দ আবুল কালামের ছেলে সৈয়দ মারুফ আহমদ ওরফে মানিক (৩১), ঝিনাইদহের মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে কাওসার শিশির (৪৬), সিলেট বিয়ানীবাজারের ফয়জুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আহমেদ ওরফে জনু (২৭), বরিশালের নয়ন মৃধার ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম আলী (১৯), সিলেটের আতিকুল আলমের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাপ্পী (২৩), সিলেটের চাতকের আবদুস সালামের ছেলে রুফু মিয়া (২৬)। গ্রেপ্তার কেএনএফের সদস্যরা হলেন রোয়াংছড়ির বাজার এলাকার লালমুন সয় বমের ছেলে জৌথান স্যাং বম (১৯), লালমিন সম বমের ছেলে স্টিফেন বম (১৯) ও জিক বিল বমের ছেলে মালসম বম (২০)।
১০ জনকে গ্রেপ্তারের পর আরও সাত জঙ্গির নাম পাওয়া গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এর আগে ১০ অক্টোবর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ৩৮ জন জঙ্গির নাম প্রকাশ করে।খন্দকার আল মঈন বলেন, বিভিন্ন সময়ে হিজরতের নামে নিখোঁজ হওয়া তরুণদের মধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে পার্বত্য অঞ্চলে প্রশিক্ষণের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে। প্রায় দুই সপ্তাহের অভিযানে সাফল্য পাওয়া গেছে।
গতকাল রাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মাধ্যমে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমিরের নাম জানা গেছে। সংগঠনটির আমিরের নাম আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। এ ছাড়া শূরা কমিটির সদস্যরা হলেন দাওয়াতি শাখার প্রধান আবদুল্লাহ মাইমুন; সামরিক শাখার মাসুকুর রহমান; সামরিক শাখার দ্বিতীয় ব্যক্তি মারুফ আহমেদ; অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার মোশারফ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা শামীম মাফুজ।