পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ১০ দেশের সঙ্গে চুক্তির পক্ষে বিএফআইইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পাচার করা অর্থ উদ্ধারে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্যপ্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য আরও ১০টি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তি (এমএলএ) স্বাক্ষরের যৌক্তিকতার কথা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতিবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। বর্তমানে শুধু ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এমএলএ রয়েছে বাংলাদেশের।

বিএফআইইউ নতুন যেসব দেশের সঙ্গে এমএলএ স্বাক্ষরের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে, সেগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, হংকং-চীন।

universel cardiac hospital

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার (২৬ অক্টোবর) অগ্রগতি প্রতিবেদনটি দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য ইতিমধ্যে হলফনামা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানাতে তিন মাস সময় চাওয়া হবে।’

অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশের সঙ্গে এমএলএ চুক্তি স্বাক্ষরের যৌক্তিকতা তুলে ধরে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি বিবেচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধও জানায় দুদক। এ প্রেক্ষাপটে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা ও বিএফআইইউর প্রতিনিধিদের নিয়ে ছয়-সাতটি দেশের সঙ্গে এমএলএ করতে পর্যালোচনা সভা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিকাব টকে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ড বলেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সুইস ব্যাংক বা কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে হাইকোর্ট সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে অর্থ রাখা বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছিল কি না, তা জানতে চান। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৪ আগস্ট বিষয়টি আদালতে ওঠে।

সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সঠিক নয় বলে সেদিন শুনানিতে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবী। এরপর দুদক ও বিএফআইইউর পক্ষে হলফনামা আকারে তথ্যাদি আদালতে দাখিল করা হয়। দাখিল করা সংযুক্ত কাগজপত্রে কারও নাম, ঠিকানা, পদবি ও সূত্র উল্লেখ না থাকায় বিএফআইইউর প্রধানকে গত ৩১ আগস্ট আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। নির্দিষ্ট দিনে বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আদালতে হাজির হয়ে সংযুক্ত কাগজপত্রে ঠিকানা, পদবি ও সূত্র উল্লেখ না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শেয়ার করুন