পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিশ্বে দারিদ্র্য মুক্তি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক উন্নতিতে জাতিসংঘ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের দুর্বলতা রয়েছে। যার কারণ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো। তাই জাতিসংঘকে শক্তিশালী করতে নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠন দরকার।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাতিসংঘের আঙিনায় শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম।
মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খারাপ অবস্থা চলছে। শক্তিশালী দেশগুলো যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এতে তাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, আমরা তথ্য ও নথিগুলো এখনও পাঠাতে পারিনি। আরও আগে পাঠাতে পারলে স্বীকৃতি পেয়ে যেতাম। এটা নিয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর নীতিতে বিশ্বাসী। সেভাবেই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতাদের কাছে সন্ত্রাসীদের অর্থায়নকারী ও অস্ত্র দাতাদের চিহ্নিত করার কথা বলেছেন। কিন্তু সেটি করা হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে অনেক সুবিধা হারানোর কথা রয়েছে। তবে আশার খবর হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছে যে ২০২৯ সাল পর্যন্ত তারা চলমান সুবিধাগুলো আমাদের দেবে। প্রযুক্তি বিষয়ে সুবিধা দেবে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত।
গুম নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয় তা সঠিক নয় দাবি করে মোমেন বলেন, ৬৮ জনের গুমের তথ্য আমরা জানি। এদের মধ্যে দুইজন আবার ভারতীয় নাগরিক। তাদের বাদ দিলে সংখ্যা ৬৬ জনে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ বন্দুকধারীদের গুলিতে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং-এর শিকার হয়। কিন্তু গত ৩ বছরে বাংলাদেশে এক্সট্রা জুডিসিয়াল কিলিং হয়েছে- তা আমার জানা নেই। যারা মারা গেছেন তারা অপরাধী।
প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
আরও বক্তব্য রাখেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি ড. রাশিদ আসকারী, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, দৈনিক বাংলা ও নিউজ বাংলা ২৪-এর মিডিয়া ডিরেক্টর মো. আফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।