দেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে এ নীতির বাস্তবায়ন করছি। যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোর শয্যা বাড়ানো ও চিকিৎসক, নার্স সাপোর্টিং স্টাফের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চতুর্থবারের মতো ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস’ উদযাপন করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তিনি চিকিৎসাসেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের যুগান্তকারী উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সরকার ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গবেষণার বুনিয়াদ সৃষ্টি করা। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ করে এর গবেষণা ও শিক্ষা কর্মকাণ্ডকে প্রাধিকারমূলক কর্মসূচির আওতায় রেখেছি এবং সে অনুসারে উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ নিজস্ব গবেষণা ব্যতীত দীর্ঘস্থায়ী ও যুগোপযোগী চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠা করা দুরূহ ব্যাপার।

সরকারপ্রধান বলেন, মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টিসেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইলফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিএসএমএমইউ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমি আশা করি, চিকিৎসা গবেষণাতেও বিশ্ববিদ্যালয়টি নেতৃত্ব দেবে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণাকে বেগবান করার জন্য ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগ দিয়েছে, যা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।

‘এ বছর গবেষণা খাতে বরাদ্দ ৪ কোটি থেকে ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকায় উন্নীত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রেসিডেন্ট চিকিৎসকদেরগবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে ‘উপাচার্য গবেষণা পুরস্কার’ সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন করেছে। সম্প্রতি অধিকতর জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একসঙ্গে ২৪ জন গবেষক শিক্ষক চিকিৎসককে পিএইচএইডি কোর্সে এনরোলমেন্ট করেছে। গবেষণার মানকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা ও জ্ঞান বিনিময়ের জন্য এআইএমএস, ব্রাউন ও শিকাগো এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জেনোম সিকোয়েন্সিং রির্সাসের ফলাফল প্রকাশ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস ২০২২ উদযাপন খুবই সময়োপযোগী পদক্ষেপ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত গবেষক, চিকিৎসক ও সংশিষ্ট সবাইকে যেমনি অনুপ্রাণিত করবে, তেমনি দেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবায় উদ্বুদ্ধ করবে। ফলে আমরা দেশে সমন্বিত উন্নয়নের গতি ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি গঠনে সমর্থ হবো।

শেয়ার করুন