ইরানে গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনির গ্রেপ্তার ও মৃত্যু ঘিরে দেশটিতে টানা ছয় সপ্তাহের নারী-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের মধ্যেই নতুন করে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটল বলে জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটি এই তথ্য জানায় বলে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, প্রায় ছয় সপ্তাহের নারী-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের মধ্যেই এবার মারাত্মক দমন-পীড়ন চালিয়ে বুধবার সন্ধ্যা থেকে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত আটজনকে হত্যা করেছে।
‘আগ্নেয়াস্ত্রের বেপরোয়া এবং বেআইনি ব্যবহারের’ নিন্দা জানিয়ে বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টি জানায়, ‘ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গতকাল রাত থেকে অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীরা শোকপ্রকাশকারী এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর আবারও গুলিবর্ষণ করলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।’
সংবাদমাধ্যম বলছে, ইরানে পুলিশ হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর কারণে যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল তা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাহাবাদে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ওই শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। মূলত আগের রাতে সেখানে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার পরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এক বিক্ষোভকারীর ‘সন্দেহজনক’ মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংক, কর অফিস এবং অন্যান্য সরকারি ভবনের জানালা ভেঙে ফেলে বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে ইরানে একটি মাজারে বোমা হামলায় নারী-শিশুসহ কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। এমনকি যারা ইরানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
বুধবারের ওই হামলার ঘটনার পর বৃহস্পতিবার ইরানিদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, হামলাকারীদের ‘অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে’। এদিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পড়া এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘শত্রু এবং বিশ্বাসঘাতক বা তাদের এজেন্টদের মোকাবিলা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।’