রংপুরে চলছে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রংপুর প্রতিনিধি

সংগৃহীত ছবি

সড়ক পথে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদ ও তিন চাকার যানবাহনসহ মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বিএনপির গণসমাবেশের দুদিন আগে হঠাৎ করে রংপুর মোটর মালিক সমিতির ডাকা এ ধর্মঘটের কারণে অন্যান্য জেলার সব পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

এদিকে বিএনপির নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিং ও খুলনার পর এবার রংপুরেও সরকারের পক্ষ থেকে বাধা সৃষ্টি করতে ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ব্যাহত করতে এ ধরনের কার্যক্রম দিয়েছেন তারা। তবে ধর্মঘটসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত হবেন বলে আশা তাদের।

universel cardiac hospital

জানা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে যান চলাচল এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম রুটে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুর জেলার সব রুটের বাস-মিনিবাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। ফলে রংপুরের সঙ্গে সারা দেশের পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে যাওয়ায় গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া। অনেকেই আবার গন্তব্যে না যেতে পেরে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, রংপুরে ধর্মঘট থাকায় তাদের দুদিনের আয় বন্ধ থাকবে। কারণ বাস না চললে মালিক পক্ষ তাদের বেতন দেয় না। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।

রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক বাস শ্রমিক বলেন, আমরা কখনোই চাই না বাস বন্ধ থাকুক, বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন মালিকরা। কিন্তু বাস বন্ধ থাকলে সাধারণ মানুষের মতো তাদেরও কষ্ট হয়। তবে এই ধর্মঘট সরকারের পক্ষ থেকে ডাকা ধর্মঘট নয় বলে দাবি করেন এই শ্রমিক।

বাস টার্মিনালে আসা রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আহমেদ সিহাব বলেন, আমি বগুড়া যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে এসেছি। কিন্তু এসে দেখছি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। অথচ বগুড়ায় ধর্মঘট ডাকা হয়নি। রংপুর থেকে কোনো বাস চলাচল করতে পারছে না। এখন চিন্তায় আছি কীভাবে বাড়ি যাব।

বদরগঞ্জ থেকে মেয়েকে নিয়ে কুড়িগ্রাম যেতে রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, হামরা তো জানি না গাড়ি বন্ধ আছে। টার্মিনালোত আসি শোনোচি গাড়ি নাকি কোনোটে যাবার নায়। হামরা এ্যলা কেমন করি কুড়িগ্রাম যামো? অটোত করি গেইলে তো ভাড়া বেশি নাগবে।

এদিকে ধর্মঘটের বিষয়টি চিন্তা করে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী রংপুরে এসেছেন। তবে তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের গণসমাবেশে আসতে বাধা দিতেই এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশে সরকার পক্ষে লোকজন একইভাবে সমাবেশে নেতাকর্মীদের বাধা দিয়েছেন।

শেয়ার করুন