‘পরিস্থিতি কঠিন, সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এখন অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। এ অবস্থায় আমরা যদি নিজেরা দাঁড়াতে পারি এটাই হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো। এ জন্য আমাদের সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। কৃচ্ছ্রসাধন করেই চেষ্টা করতে হবে আমাদের।

এসময় প্রধানমন্ত্রী জানান, যে সব জিনিস বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, তার দাম বেড়ে যাচ্ছে। মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় এই অবস্থায় হয়েছে।

শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আজ বুধবার রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪, ১২৫ এবং ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি, উন্নত দেশগুলোর অবস্থা। এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ডসহ প্রত্যেকটা দেশ এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না, খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে, সেখানে সব জায়গায় রেশনিং করে দেওয়া হয়েছে। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বহু আগে থেকেই এটা বলে যাচ্ছি যে, এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে। কারণ আমাদের নিজের খাদ্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্য শিল্পায়ন দরকার এবং দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

গবেষণায় গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি যত বেশি হবে ক্রয়ক্ষমতা যত বাড়বে দেশে শিল্পায়নও বাড়বে। আর শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কৃষিভিত্তিক শিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে আমাদের।

তিনি আরও বলেন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি এই উদ্দেশ্যে যে, যত্রতত্র কেউ যেন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে না পারে। কারণ কৃষিজমি বাঁচাতে হবে।

শিল্পায়ন যেখানে হবে এরসঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আবার বর্জ্য থেকে সার এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে একটু সুযোগ দিলে বা বোঝাতে পারলে তারা কিন্তু অসাধ্য সাধন করতে পারে। যেমন জাতির পিতা মুক্তিযুদ্ধের সময় বলেছেন, ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা কর’ এদেশের মানুষ কিন্তু তা করেছে। বিজয় এনে দিয়েছে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী নবীন বিসিএস কর্মকর্তাদের ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন, বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বই পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে করে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারবেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি তিনটি ব্যাচের ১০৩ কর্মকর্তার হাতে সনদ তুলে দেন এবং ফটোসেশনে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এতে আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম এবং একাডেমির রেক্টর (সচিব) মোমিনুর রশিদ আমিন।

১২৪, ১২৫ ও ১২৬তম ব্যাচে শীর্ষস্থান অর্জন করে রেক্টরস পদক লাভকারী তানিয়া তাবাসসুম, মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও ফারহানা নাসরিন অনুষ্ঠানে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

শেয়ার করুন