শান্তিরক্ষা অপারেশন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পিসকিপিং ট্রেনিং সেন্টারের (আইএপিটিসি) ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন সেনাপ্রধান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং সেন্টারে (বিপসট) আইএপিটিসি’র ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ‘তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, শান্তিরক্ষা অপারেশন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতন থাকতে হবে। আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সম্মেলনে গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন উপস্থাপনা অংশগ্রহণকারীদের আরও প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠান সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিপসট ও অংশগ্রহণকারী সবসদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সামরিক উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি দেন সেনাপ্রধান।
জাতিসংঘের অনুরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করে এবং এরই মধ্যে দুটি মিশনে এ সামগ্রীর ব্যবহার প্রচলন করে। জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামরিক উপদেষ্টা এ প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং প্রি-ডেপ্লয়মেন্ট ট্রেনিংয়ে সরঞ্জাম ব্যবহারের জন্য অন্যান্য দেশকে উদ্বুদ্ধ করেন।
এছাড়া সম্মেলনে শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণবিষয়ক বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, প্রকাশনা, গবেষণাপত্র ইত্যাদির একটি প্রদর্শনী ‘আইডিয়া বাজার’ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ থেকে আগত শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ইনস্টিটিউট প্রদর্শনীতে অংশ নেয় এবং শান্তিরক্ষায় বিভিন্ন সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ধারণা তুলে ধরে। প্রদর্শনীতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী এবং পুলিশের ব্যবহৃত আধুনিক অস্ত্র এবং সরঞ্জামাদি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়।
এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যাতে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উপস্থাপন করা হয়।
সম্মেলন শেষে এক ব্রিফিংয়ে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান, সরকারের সদিচ্ছা, সেনাসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা ইত্যাদি তুলে ধরেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সেনাপ্রধান।
সম্মেলনে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, সংসদ সদস্য, জাতিসংঘের সামরিক উপদেষ্টা, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রধান/প্রতিনিধি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ, আইএপিটিসির সদস্যভুক্ত ৫২টি দেশ থেকে আগত প্রায় ১৩৫ জন বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।