ভারতের কাছে আবারও তীরে এসে তরি ডুবেছে বাংলাদেশের। যার ফলে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনাটা বড় এক ধাক্কাই খেয়ে গেছে সাকিব আল হাসানদের। তবে এখনো সে সম্ভাবনাটা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। তবে ভারতের কাছে হারটা সে সম্ভাবনাটাকে আটকে দিয়েছে নানা সমীকরণের বেড়াজালে।
গতকাল অ্যাডিলেড ওভালে বাংলাদেশের এই ম্যাচের আগে সাকিবদের সামনে সমীকরণ ছিল দুই ম্যাচের দুটোতে জিতলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই সেমিফাইনালে চলে যাবে দল। ভারতের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ে নেমে ১৮৪ রান হজমের পর জবাবটা ভালোই দিচ্ছিল বাংলাদেশ, ৬৬ রান তুলে ফেলেছিল ৭ ওভারে, কোনো উইকেট না হারিয়েই। লিটন দাসের ব্যাটে চড়ে তখন অসাধ্য সাধনের স্বপ্নে বিভোর ছিল দল।
তবে এরপর এলো বৃষ্টি। তা যখন থামল শেষমেশ, বাংলাদেশের লক্ষ্যটা দাঁড়াল ১৬ ওভারে ১৫১, বাকি ৯ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮৫ রান। বৃষ্টির পর লিটন দাসের রান আউটে মোমেন্টাম হারায় দল। এরপরও অবশ্য দারুণ লড়েছিলেন তাসকিন আহমেদ, নুরুল হাসানরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। হারতে হয়েছে ৫ রানের ব্যবধানে।
এই হারের ফলেই সমীকরণটা কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে যদি পাকিস্তানকে হারাতেও পারে, তাহলেও নিশ্চিত হবে না সাকিবদের সেমিফাইনালে খেলা। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য সব ম্যাচের দিকে।
গত রাতের এই ম্যাচ শেষে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় গ্রুপের শীর্ষে উঠে গেছে ভারত। চার ম্যাচ শেষে দলটির জয় তিনটি, ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের চূড়ায় আছে দলটি। দক্ষিণ আফ্রিকা আছে দুইয়ে, তাদের পয়েন্ট ৫। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বাংলাদেশ, ৩ পয়েন্ট নিয়ে এর পরের অবস্থানটা জিম্বাবুয়ের। সবশেষ ম্যাচে জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে তালিকার পাঁচে, যদিও বাবর আজমদের হাতে আছে আরও দুই ম্যাচ। সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটে পিছিয়ে নেদারল্যান্ডস আছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে।
এই অবস্থান থেকে শীর্ষ দুই নিশ্চিত করে সেমিফাইনালে খেলতে হলে বাংলাদেশের পক্ষে মিলে যেতে হবে অনেক সমীকরণ। শীর্ষে থাকা ভারত যদি শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে যায় দুই-তিন ওভার বাকি থাকতে কিংবা ১৫-২০ রানে, আর বাংলাদেশ যদি তার চেয়েও বেশি ব্যবধানে হারায় পাকিস্তানকে, তাহলে অন্য আর কোনো ম্যাচের হিসেব ছাড়াই শেষ চারে চলে যাবে বাংলাদেশ, কপাল পুড়বে ভারতের।
দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্ভাগ্যের সুযোগও নিতে পারে বাংলাদেশ। প্রোটিয়ারা যদি নিজেদের শেষ দুই ম্যাচেই হারে, তাহলে পাকিস্তানকে হারালেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে দলের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের শেষ দুই ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
যদিও নিজেদের মান ধরে রেখে খেলতে পারলে ভারতের জিম্বাবুয়ের কাছে হারার কথা নয়, নেদারল্যান্ডসও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারার কথা নয়! সে কারণেই বলা যায়, কাগজে কলমে হিসাবটা টিকে থাকলেও আসলে সুযোগটা হারিয়েই বসেছে বাংলাদেশ।