স্বাধীনতাবিরোধী চক্র জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার পাশাপাশি জাতিকে নেতৃত্বহীন করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘাতকচক্রের উদ্দেশ্য ছিল দেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসনের উত্থানের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের চেতনা থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ মুছে ফেলা। কিন্তু ঘাতকচক্রের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

universel cardiac hospital

রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। জাতীয় জীবনে এক শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান বন্দি অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন। আমি তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম আর রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর এ স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। তার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান, যার পথ ধরে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের এ পথচলা ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তদানীন্তন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগারে বন্দি থাকায় তার অবর্তমানে জাতীয় চার নেতা মুজিবনগর সরকারের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, রণনীতি ও রণকৌশল প্রণয়ন, কূটনৈতিক তৎপরতা, শরণার্থীদের তদারকিসহ মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করতে অসামান্য অবদান রাখেন। জাতি তাদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

তিনি আরও বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার আদর্শ চির অম্লান থাকবে। বঙ্গবন্ধু সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন– এটাই হোক জেলহত্যা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।

শেয়ার করুন