আইএমএফের ঋণের কিছু শর্তের ‘বৈষম্যমূলক প্রভাব’ নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)
ফাইল ছবি

বাংলাদেশকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিছু শর্তের বৈষম্যমূলক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে নিজস্ব নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

আজ শনিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ উদ্বেগের কথা জানায়।

universel cardiac hospital

জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি সংস্কারের মতো কিছু শর্তের সম্ভাব্য অসম প্রভাবের বিষয়ে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টিআইবি জানায়, শর্তের পুরো প্যাকেজকে এমনভাবে সাজানো উচিত যাতে এরই মধ্যে অতিরিক্ত চাপে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাব আরও বেড়ে না যায়।

বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির নীতিগত বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঋণ আলোচনায় আইএমএফ নিজস্ব নীতি বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রতিরোধে কার্যকর কৌশলগত বিষয়ে মনোযোগ দিতে হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো না নিয়ে তৈরি করা শর্তের প্যাকেজ কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য অর্জন করবে- এমন সম্ভাবনা কম। বরং এর মাধ্যমে এরই মধ্যে অতিরিক্ত চাপে থাকা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাবের বাড়তি বোঝা তৈরি হবে।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আইএমএফ’র ঋণ প্রদান ব্যবসার অপরিহার্য বাস্তবতা হচ্ছে তাদের দেওয়া শর্তসমূহ, যা প্রায়শই কঠিন এবং অপ্রীতিকর হয়। তবে প্রশ্ন হলো, শর্তের প্যাকেজ কি জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেয় নাকি তা জনগণের জন্যই বিপরীতমুখী ফল বয়ে আনে?

তিনি বলেন, আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশের নিম্ন কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে উদ্বেগ যথার্থ। কিন্তু প্রধানত ভ্যাটের ওপর আইএমএফ’র প্রস্তাবিত কৌশলের নির্ভরতা উদ্বেগজনক, যার বৈষম্যমূলক প্রভাব সর্বজনবিদিত। অন্যদিকে, শর্তসমূহে ব্যাপক কর ফাঁকি এবং অর্থপাচার, বিশেষ করে মিস ইনভয়েসিং ভিত্তিক অবৈধ অর্থপাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য পদক্ষেপের কোনো ইঙ্গিত নেই। দেশে ও দেশের বাইরে আর্থিক লেনদেনের তথ্যের স্বয়ংক্রিয় আদান-প্রদানের জন্য কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (সিআরএস) গ্রহণ করা গেলে এসব দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধ করা সম্ভব হতো।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, আইএমএফ দুর্নীতি এবং অর্থপাচার রোধে সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক ঋণদাতা এই প্রতিষ্ঠান নিজেদের সম্পর্কে যা প্রচার করে তা অনুশীলনও করবে।

শেয়ার করুন