ইউক্রেনের রকেট হামলায় রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত নোভা কাখোভকা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ রোববার রুশ জরুরি সেবা সংস্থার এক প্রতিনিধির বরাতে এ তথ্য জানায় দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা তাস।
রুশ জরুরি সেবা সংস্থার ওই কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমারস ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার মাধ্যমে রকেটটি বাঁধের তালায় আঘাত হানে। এ ধরনের হামলায় বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সুবিশাল কাখোভকা বাঁধ যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত তাত্পর্য ধারণ করেছে। খেরসনের নিপ্রো নদীকে আটকে রেখেছে এ বাঁধ। আর এ এলাকাতেই নিজেদের অবস্থান বেশ শক্তিশালী করে তুলেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
অক্টোবর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের বিরুদ্ধে বাঁধটি ভাঙার পরিকল্পনার অভিযোগ জানিয়ে আসছিল। এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর পরবর্তী নিশানা ইউক্রেনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প লাগোয়া জলাধার। রাশিয়া যদি এমন জলাধারে হামলা চালিয়ে বাঁধ ধ্বংস করে দেয়, তা বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
সেসময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রুশ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য হলো নিপ্রো নদীর ওপরে নির্মিত কাখোভকা বাঁধ। এ বাঁধ যদি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে খেরসনসহ ৮০টি এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেবে। দেশের দক্ষিণাংশে পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি জাপোরিঝিয়ায় ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও পানির অভাবে বন্ধ হয়ে পড়বে।
সবশেষ গত ৩১ অক্টোবর ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ও পানিবিহীন হয়ে পড়েন কিয়েভের ৮০ শতাংশ বাসিন্দা। একই অবস্থা দেখা দেয় দেশটির অন্য সাত অঞ্চলে।
এ হামলার দুদিন আগেই ইউক্রেনের সঙ্গে হওয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার গোষণা দেয় রাশিয়া। গত জুলাইয়ে যুদ্ধরত দুই দেশের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত ওই চুক্তি সইয়ের বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছিল জাতিসংঘ ও তুরস্ক।
এর আগে কিয়েভের বিরুদ্ধে কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার অভিযোগ তোলে মস্কো। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেন। সম্প্রতি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ক্রিমিয়া সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার পরপরই ইউক্রেনে আক্রমণের মাত্রা বাড়ায় পুতিন প্রশাসন।
সূত্র: রয়টার্স