আবারও রাশিয়ার হামলার মুখে পড়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। আজ মঙ্গলবার শহরটিতে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বাজার পর অন্তত দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, দুটি আবাসিক ভবনে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এদিন ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখার কয়েক ঘণ্টা পরেই কিয়েভে হামলা চালায় রাশিয়া।
জেলেনস্কির অফিসের প্রধান অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক এক টুইটে বলেছেন, জেলেনস্কির ‘শক্তিশালী বক্তব্যের’ প্রতিক্রিয়ায় নতুন করে ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’ চালিয়েছে রাশিয়া। তার প্রশ্ন, কেউ কি সত্যিই ভাবেন, ক্রেমলিন শান্তি চায়? শান্তির পরিবর্তে তারা চায় ‘আনুগত্য’।
বিবিসির ইউক্রেন সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউজ এক টুইটে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আরও একটি বড় মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। কিয়েভে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, কিয়েভ ছাড়াও ইউক্রেনের দক্ষিণে খমেলনিটস্কি ও ক্রিভি রিহ এবং উত্তরে চেরনিহিভ এলাকায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ক্রিভি রিহের গভর্নর বলেছেন, একটি রুশ টু-৯৫ বোমারু বিমান থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে হামলার পর কিয়েভের একটি আবাসিক ভবন থেকে ধোয়া উড়তে দেখা গেছে।
এর আগে, মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসন শেষ করার ‘এখনই সময়’।
বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির জোট জি-২০’র সদস্য নয় ইউক্রেন। কিন্তু এবারের সম্মেলনের আলোচ্য ইস্যুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বড় প্রভাব থাকায় বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছেন জেলেনস্কি।
মঙ্গলবার তার বক্তব্য শুনেছেন সম্মেলনে উপস্থিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো বিশ্বনেতারা। রাশিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
বক্তব্যে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি নিশ্চিত, রাশিয়ার ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধ করার এখনই সময় এবং এটি করতে হবে। বক্তব্যের শেষাংশে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিচার করতে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শুরুর আহ্বান জানান জেলেনস্কি।
এদিন সম্মেলনে উপস্থিত বেশিরভাগ নেতাই ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার নিন্দা জানান।