ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিতে রফিকুল ইসলাম নয়ন মিয়া (১৮) নামের এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা সদরের মোল্লাবাড়ির সামনে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রক্ত বন্ধ করে বিকেলে স্যালাইন দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এসএসআই) মাসুদ মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।’ নিহত রফিকুল বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি ও শিবপুর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, তারা আজ বিএনপির নেতা সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে মোল্লাবাড়ি থেকে একটি মিছিল বের করেন। ওই মিছিলে রফিকুল ছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মিছিলটি উপজেলা সদরের বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা পার হয়ে মোল্লাবাড়ির মসজিদের সামনে যেতে সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ জড়ো হয়।
পুলিশ সে সময় সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় ছাত্রদল নেতা রফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির দুই কর্মী রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশ জানায়, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন (৩০) ও বিকিরণ চাকমা (৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।