মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ঢাকার আদালতের ফটক থেকে ছিনিয়ে নেন দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অবহেলার অভিযোগও করছেন অনেকে। ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া দুই আসামি হলেন—মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব।
তারা জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন ওরফে দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আবু সিদ্দিক ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলারও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। আজ দুই জঙ্গিসহ ১২ আসামিকে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে অন্য একটি মামলায় হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদেরকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ফটক থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিএমএম আদালতের প্রধান ফটকের কাছে পৌঁছালে সংঘবদ্ধ বেশ কয়েক দুর্বৃত্ত দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের চোখে স্প্রে করেন। পুলিশ কনস্টেবলদের মারধর করে দুজনকে ছিনিয়ে নেন তারা। এ সময় আসামিরাও কনস্টেবলকে মারধর করেন।
ওই সময় দায়িত্বরত এএসআই মহিউদ্দিন বলেন, প্রথমেই আসামিরা একে আজাদকে ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা কনস্টেবলদের চোখে স্প্রে করেন। ঘটনার পর অকুস্থলে হাজির হওয়া গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ প্রধান হারুন অর রশিদও একই ধরনের বর্ণনা দেন।
এ ঘটনায় দেশের সব আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। ঢাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে পুলিশ। ঘটনায় পুলিশের কেউ জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে আদালতের ফটক থেকে আসামি ছিনতাই কীভাবে সম্ভব হলো, এ নিয়ে চলছে আলোচনা।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিদের যেভাবে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আদালত বা ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়, আজ সে রকম কোনো ব্যবস্থা ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একজন পুলিশ কনস্টেবল চার জঙ্গিকে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে যান। আবার ট্রাইব্যুনাল থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় একইভাবে নেওয়া হয়। সাধারণত দুজন আসামিকে একটি হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেওয়া হয়। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে হাতকড়া পরানো ছিল।