সফল হওয়ার প্রথম শর্ত নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা: জঁ তিরোল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনে নোবেল বিজয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ ড. জঁ তিরোল বলেছেন, গ্র্যাজুয়েটদের সূক্ষ্ণ চিন্তার অধিকারী হতে হবে। যখনই তাঁরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবেন, বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এর সমাধান বের করতে হবে। সফল হওয়ার প্রথম শর্ত হলো নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ আয়োজনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ৫৩তম ব্যক্তি হিসেবে অনুষ্ঠানে তাঁকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেওয়া হয়।

অর্থনীতিবিদ হয়ে ওঠার স্মৃতিচারণ করে জঁ তিরোল জানান, ছোটকাল থেকে তিনি গণিত ও দর্শন অধ্যয়নে পছন্দ করতেন। এরপর তিনি পদার্থ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ২১ বছর বয়সে তিনি অর্থনীতি নিয়ে জানতে শুরু করেন। তিনি অনুধাবন করেন, অর্থনীতি একই সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি খাতে নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতির সমস্যা নির্ণয় এবং সমাধানে বিরাট অবদানের সুযোগ রয়েছে।

universel cardiac hospital

স্নাতকদের উদ্দেশে জঁ তিরোল বলেন, আপনারা মনে করতে পারেন, নোবেল বিজয়ীরা সুপারম্যানের মতো অসাধারণ। নোবেলজয়ীরা অন্যান্য সাধারণ পেশার মানুষের মতোই। তাঁরাও হাসেন, মজা করেন। যখন তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন, তখন ভাবেননি যে কখনও নোবেল পুরস্কার পাবেন কিংবা এখানে এসে বক্তব্য দেবেন। প্রত্যেককে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। নিজেদের পেশার প্রতি অনুরাগী হতে হবে।

তিনি বলেন, নোবেল বিজয়ীসহ পেশাগতভাবে সফল যে কোনো মানুষের গল্পটা কঠোর নিষ্ঠার। আপনাদের কঠোর পরিশ্রমী ও নিজের কাজের ক্ষেত্র নিয়ে প্রগাঢ় উৎসাহী হতে হবে। একই সঙ্গে সে সম্পর্কে সূক্ষ্ণ বিশ্নেষণ করার সক্ষমতা থাকতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে আপনারা শিখবেন। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় যাওয়ার স্পৃহা থাকতে হবে। প্রত্যেকের প্রতিভা আছে।

তিনি আরও বলেন, স্নাতক হওয়ার এই যাত্রায় যাঁরা আপনাদের পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। ডিগ্রিপ্রাপ্তি আপনাদের সামনে অনেক সুযোগের পাশাপাশি অনেক দায়িত্বও তৈরি করবে। আপনাদের সমাজ নিয়ে ভাবতে হবে। ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে কীভাবে সমাজের উপকার করা যায়, পৃথিবী ও মানুষকে রক্ষায় কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করা যায়, কীভাবে বিভিন্ন অসংগতির বিপরীতে নিজের যুক্তিকে দাঁড় করাতে হবে- তা ভাবতে হবে। বাংলাদেশের গত ৫০ বছরের উন্নয়ন নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারে, এ জন্য আপনাদের অবদান রাখতে হবে। শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বাড়াতে আরও কাজ করতে হবে।

শেয়ার করুন