সবধরনের সংকীর্ণতাকে পরিহার করতে হবে: মোকতাদির চৌধুরী

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, ইসলাম সম্পর্কে দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের ধারণা খুবই নিম্নমানের। আমরা মুহাদ্দিস হই, আমরা মুফতি হই, আমরা মুফাসসির হই, শুধু আমরা ইসলাম ধর্মকে ভালোভাবে বুঝি না। যেমন- এই দেশে কিছুদিন আগেও কিছুসংখ্যক লোক, যারা নিজেদেরকে আলেম বলে দাবি করেন, তারা দাবি জানালো যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুধীন্দ্রনাথ দত্তের মতো যারা বিখ্যাত বিখ্যাত কবি আছেন তাদের কবিতা স্কুল-কলেজে পড়ানো যাবে না। কেননা তারা কেউ মুসলিম নন, এরকম আজগুবি দাবি পৃথিবীর কোথাও আর হয়েছে কিনা আমি জানি না। যারা এই উদ্ভট দাবি করেছেন, তারা শুধু জানেন না- ইমরুল কায়েস নামে এক ভদ্রলোক ছিলেন, যিনি পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, তিনি মুসলিম নন এবং তাঁর কবিতা মাদ্রাসায় পড়ানো বাধ্যতামূলক!

সোমবার (২১ নভেম্বর) হাওর অঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, এদেশে একসময় মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হারাম বলে যেসব তথাকথিত আলেমরা ফতোয়া জারি করে ছিল, এখন এটি তাদের কাছে হালাল হয়ে গেছে। পবিত্র কোরআনের কোথাও বলা হয়নি, ছবি তোলা যাবে না, মাইক্রোফোন ব্যবহার করা যাবে না, ভিডিও করা যাবে না। আমি এই কথাগুলো বললাম এজন্যই যে, আমরা ইসলাম সম্পর্কে কত কম জানি সেটি বুঝানোর জন্যে। যদি আমরা ইসলাম সম্পর্কে বিশদভাবে জানতাম তাহলে আমরা একই কাজকে আজকে হারাম আর কালকে হালাল বলতাম না।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আল্লাহ পাক বলেছেন, ‘আমি পৃথিবীতে এমন কোনো জীব প্রেরণ করি নাই যা অর্থহীন। প্রত্যেকটা জীবকে আমি এখানে প্রেরণ করার পেছনে নিশ্চয়ই তার কোনো না কোনো কারণ আছে।’ আমাদের ঐ কারণগুলো অনুসন্ধান করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, গ্রহ-নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, অথচ গ্রহ-নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিখ্যাত বিখ্যাত মুসলমান যারা ইতিহাসে আছেন, তাদের প্রত্যেককেই কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছেন তদানিন্তন সময়ের উলামায়ে দ্বীন বলে পরিচিত একধরনের লোকেরা। যেমন-শেখ সাদী,যিনি একাধারে অংকবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও কবি ছিলেন, তাঁকে কাফের বলা হয়েছে। কাজেই আমাদের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হলে সবধরনের সংকীর্ণতা ও বিভাজনমূলক নীতিকে পরিহার করতে হবে।

শেয়ার করুন