কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম অঘটনগুলোর একটি সৌদি আরবের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ২-১ গোলের ব্যবধানে পরাজয়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুরুতেই ৯ মিনিটে ফ্রান্সের গোল খাওয়া আরেকটি অঘটনের আভাস দিচ্ছিল। কিন্তু কিসের কি! ফ্রান্স যে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট তা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিল তারা।
সকারুদের ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে উড়ন্ত সূচনা করলো দিদিয়ের দেশমের দল। ফ্রান্সের হয়ে জোড়া গোল করেন জিরু; আর ১টি করে গোল করেন এমবাপ্পে ও রাবিও। অন্যদিকে সকারুদের পক্ষে গোল করেন গুডউইন।
শুরু থেকে ফ্রান্স মাঝ মাঠের দখল নিয়ে খেলতে থাকে। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ৯ মিনিটেই গোল খেয়ে বসে ফ্রান্স। ডান পাশ দিয়ে লেকির বাড়ানো ক্রসে গোল করে অস্ট্রেলিয়াকে স্বপ্নের মতো শুরু এনে দেন গুডউইন। এ সময় ইনজুরিতে পরে লুকাস হার্নান্দেজ মাঠ ছাড়েন। তার বদলি হিসেবে নামেন তার ভাই থিও হার্নান্দেজ।
গোল খেয়েই যেন আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যায় ফ্রান্সকে। মুহুর্মুহু আক্রমণে অজি রক্ষণভাগে ঝড় তুলেন এমবাপ্পে, গ্রিজম্যান, দেম্বেলেরা। ২৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান রাবিও। থিও হার্নান্দেজের ক্রসে হেড দিয়ে গোল করেন এই জুভেন্টাস মিডফিল্ডার।
প্রথম গোলের ঠিক ৫ মিনিট পর আবারো গোল করে ফ্রান্স। এবার গোলের খাতায় নাম লেখান অলিভার জিরু। সকারুদের ডিফেন্সের ভুলে ডিবক্সে বল পান রাবিও। তার বাড়ানো ক্রসে সহজতম গোল করে ফ্রান্সের জার্সিতে ৫০তম গোল উদযাপন করেন তিনি। ইউরোপিয়ানদের পক্ষে ১৯৯৪ সালের পর সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতা বনে যান তিনি।
ম্যাচ শেষের আগে ৪৫ মিনিটে গ্রিজম্যানের ক্রসে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল গোলবারের ওপর দিয়ে মারেন এমবাপ্পে। নিশ্চিত সুযোগ মিস করেন এই পিএসজি তারকা। এর ঠিক ২ মিনিট পর ফ্রেঞ্চ দুর্গে ভয় ধরিয়ে দেয় সকারুরা। মিডফিল্ডার পাউলির হেড ফ্রান্সের গোলবারে লেগে বাইরে চলে গেলে বিরতির আগে সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া। ফলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
বিরতি থেকে ফিরে আরও আগ্রাসী হয় ফ্রান্স। মাঝমাঠ দখলে নিয়ে দুই উইং দিয়ে দারুণ কিছু গোলের সুযোগের চেষ্টা করে, কিন্তু তা অজি রক্ষণভাগে আটকে যায়। ৬৯ মিনিটে ফ্রান্সের হয়ে কাতার বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি করেন এমবাপ্পে। দেম্বেলের দারুণ ক্রস থেকে গোল করেন তিনি৷
এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই ৭২ মিনিটে আবার গোল ফ্রান্সের। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে অলিভার জিরু হয়ে যান ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচের গোলদাতা। ৫১ গোল করে জিরু এবং থিয়েরি অরি দুজনকি শীর্ষে অবস্থান করছেন। শেষে আর কোনো গোল না হলেও ৪-১ ব্যবধানের বিশাল জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।