প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজপথে শক্তি দেখিয়ে সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সেটা হবে না। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্যগুলো যদি গণমাধ্যমের মাধ্যমে তাদের (রাজনৈতিক দল) কাছে যায়, তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আছে তারাও একটু চিন্তা করবেন। রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সুন্দর নির্বাচন হবে, এটা বিশ্বাস করি না। এখন সব দলই বলতে চাচ্ছে, রাজপথে দেখা হবে, রাজপথে শক্তি পরীক্ষা হবে। সিইসি হিসেবে আমি বলবো রাজপথে শক্তি দেখিয়ে সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সেটা হবে না। আপনাদের নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচনের মাঠে নীতি বিধি অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
সিইসি বলেন, আমি যেটার ওপর জোর দেবো সেটা হচ্ছে নির্বাচনে কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ পুলিশ দিয়ে আমি ব্যালেন্স তৈরি করব না। দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালেন্স তৈরি করবে। যদি তারা ভারসাম্য তৈরি না করেন তাহলে পুলিশ, মিলিটারি দিয়ে সব সময় নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে, আস্থাভাজন উঠিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, তিনজন সিনিয়র নেতা কয়েকদিন আগেও বলেছেন আমি নাম বলবো না, বড় দলের, তারা বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগ অপরিহার্য। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মোটাদাগে কিছু মতৈক্য না থাকে, একটা সুন্দর নির্বাচন তুলে দিতে পারবে না। অবশ্যই দলগুলোর সহায়তা লাগবে, একটা সমঝোতা লাগবে এবং সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে এবং পদ্ধতিটা স্বচ্ছ হবে তাহলেই নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হবে।
আইন সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সাড়া না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো আসেনি এটা ঠিক। কিন্তু আসবে না সেটা বলছি না। আমরা একটু অপেক্ষা করি। আমরা পাঠিয়েছি, আমার বিশ্বাস সরকার সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। করে যেটা যৌক্তিক, আমরা মনে করি আমরা যৌক্তিক বিষয়টাই পাঠিয়েছি, আমার মনে হয় না সরকার সেটা অগ্রাহ্য করবে। আমরা আরও কিছু দিন দেখি। তারপর সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।
ডায়ালগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ডায়ালগ যত করা যায় ভালো। আমাদের চেয়ে বাইরে যারা আছেন, যেমন একটা বড় দল কয়েকদিন আগেও বলেছেন, সরকারের যদি সদিচ্ছা না থাকে, নির্বাচন কমিশন যে কোনো কারণেই হোক আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থায় সরকার, আওয়ামী লীগ নয়। সরকারের একটা ভিন্ন সত্তা আছে। তার যে মিনিস্ট্রিগুলো আছে, ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের আমাদের সহায়তা করতে হবে, তাদের দিক থেকে যদি আন্তরিক সদিচ্ছাভিত্তিক সহায়তা যদি না থাকে।
‘তাহলে নির্বাচনটাকে একটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সফল করা হয়তো সম্ভব হবে না। তাদের সহযোগিতা যদি থাকে নির্বাচনটা আরও বেশি সুন্দর ও সফল হবে। যার ফলে রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন ডায়ালগ খুব প্রয়োজন। আমরা যেটা দেখছি দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগ হচ্ছে না। এটা হওয়া খুব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।’