দেশের ব্যাংকগুলোতে টাকার সংকটের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রয়েছে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্যকালে তিনি একথা বলেন। বিকাল তিনটার কিছু সময় আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে উপস্থিত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই বলে অনেকে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। অনেকে ব্যাংকে টাকা নেই শুনে টাকা তুলে ফেলছে। এতে সে আরও বিপদে পড়তে পারে। ঘরে টাকা রাখলে চুরি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।’
‘তবে আমি আপনাদের বলছি ব্যাংকে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রয়েছে। আমি বুধবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রয়েছে।’
রিজার্ভ নিয়ে সমালোচকদের জবাব দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকে এখন রিজার্ভ নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা করছে। অথচ আমাদের সরকার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়েছে। আর কোনো সরকার রিজার্ভ বাড়াতে পারেনি। পর্যাপ্ত রিজার্ভ হাতে রেখেই সব কাজ করছি আমরা। রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই, আমাদের সব ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা আছে। সামনের দিনেও কোনো সমস্যা হবে না।
‘অনেকে প্রশ্ন করেন, রিজার্ভ গেল কোথায়? আমরা তো রিজার্ভ অপচয় করিনি। মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি। জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে, খাদ্যশস্য কিনেছি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। করোনার টিকা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি। এসব কাজে রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হয়েছে আমাদের। কারণ আমরা সবসময় মানুষের কথা চিন্তা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছি’—যোগ করেন শেখ হাসিনা।
সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে সম্ভব চাষাবাদ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, কারও জমি যেন অনাবাদি না থাকে। প্রত্যকটা জমি আবাদ করতে হবে। যাতে করে আমাদের খাদ্য ঘাড়তি না হয়। কারও কাছে হাত পাততে না হয়। কারো কাছে চেয়ে চলতে না হয়। যার কাছে যা আছে তা দিয়ে কিছু উৎপাদন করেন। একটা মরিচ গাছ লাগান, একটা লাউ গাছ লাগান, সিম গাছ লাগান। এখানে মা-বোনেরা আছেন। তাদের কাছে এটাই আহ্বান আমার।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, মির্জা আযম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জনসভা শুরু হয়। জনসভার সভাপতি ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন প্রারম্ভিক বক্তব্য দিয়ে জনসভা শুরু করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে দুপুর ১২টার মধ্যে জনসভা স্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জনসভা স্থল পেরিয়ে আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। পুরো শহর উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্লোগানে স্লোগানে ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানায় লাখ লাখ জনতা।