বিশ্বকাপে অন্যতম তারকাবহুল দল বলা হচ্ছিল তাদের। অন্যতম হট ফেবারিটও। কিন্তু মাঠের খেলায় দেখা যায়নি সেই আসল আধিপত্যময় খেলা। ঘানার বিপক্ষে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই জয় পেতে ঘাম ছুটে গেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের।
রোনালদোর রেকর্ড গড়া দিনে আফ্রিকান জায়ান্টদের ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারালো ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। পর্তুগালের হয়ে একটি করে গোল করেন রোনালদো, ফেলিক্স ও রাফায়েল লেও। আর ঘানার পক্ষে গোল করেন জর্দান আইয়ু ও বুকারি। ম্যাচের সবটুকু আকর্ষণ যেন পুঞ্জীভূত ছিল দ্বিতীয়ার্ধের জন্য।
২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেও এই ঘানার বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল রোনালদোরা। সেবার ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল তারা। এবারের বিশ্বকাপেও ঘানার উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে পর্তুগিজরা।
শুরুতেই গোলের দেখা পেয়ে যেতো পর্তুগাল কিন্তু ম্যাচের ১০ মিনিটে করা রোনালদোর শট রুখে দেন ঘানার গোলরক্ষক।
ব্রুনো ফার্নান্দেজ, বার্নান্দো সিলভারা মাঝমাঠ নিজেদের দখলে রাখলেও কাঙ্ক্ষিত সুযোগ তারা তৈরি করতে পারছিল না ঘানার শক্তিশালী ডিফেন্সের বিপক্ষে।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে রোনালদো গোল করলেও সেই গোলের আগে ঘানার এক ডিফেন্ডারকে ফাউল করার কারণে গোলটি বাতিল করে দেয় রেফারি ফলে অপেক্ষা আরো বাড়ে রোনালদোদের।
পুরো প্রথমার্ধে পর্তুগাল ডিফেন্সে একবারও বলে পা দিতে পারেনি ঘানার খেলোয়াড়রা। যা ১৯৯৮ সালের পর বিশ্বকাপের যেকোন ম্যাচে তাদের হয়ে প্রথম এমন ঘটলো।
শেষ দিকে রোনালদোর দূরপাল্লার শট গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে গেলে গোলশূন্য ড্র নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচের আকর্ষণ আরো বাড়তে থাকে। ম্যাচের ৬১ মিনিটে রোনালদোকে পেনাল্টি বক্সের ভেতর ফাউল করে পর্তুগালকে পেনাল্টি উপহার দেন সালিসু।
স্পট কিক থেকে গোল করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন রোনালদো। একমাত্র ফুটবলার বিশ্বকাপ ইতিহাসে ৫টি টুর্নামেন্টে গোল করার অনন্য নজির স্থাপন করলেন রোনালদো। এছাড়া বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় বয়স্ক ফুটবলার হিসেবে গোল করার রেকর্ডও এখন তার দখলে।
এক গোলে পিছিয়ে থেকেও খেই হারায়নি ঘানা। ৭৩ মিনিটে পর্তুগাল ডিফেন্সের ভুলে সুযোগ পেয়ে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান জর্দান আইয়ু।
তবে লিড পেতে বেশি দেরি হয়নি রোনালদোদের। ৭৮ মিনিতে ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্রস থেকে ডিবক্সের ভেতর বল পেয়ে দলকে এগিয়ে দেন হোয়াও ফেলিক্স।
ফেলিক্সের গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার গোল করে বসে পর্তুগাল। এবার বদলি হিসেবে নামা এসি মিলান তারকা রাফায়েল লেয়ো গোল করে দলের স্কোরশিটে নিজের নাম লেখান।
৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে কিছুটা গা-ছাড়া ভাব দেখা যায় পর্তুগালের ভেতর। এই সুযোগটাই নেয় ঘানা। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে ঘানার বুকারি গোল করলে ব্যবধান ৩-২ এ নিয়ে আসে ঘানা।
ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ সেকেণ্ড আগে ঘানা ম্যাচে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগটি মিস করে। পর্তুগাল গোলরক্ষক ডিয়েগো কস্তা হাত বল নিয়ে কিক করতে গেলে পেছনে থাকা ইনাকি উইলিয়ামস সেই বল নিয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন। হাফ ছেড়ে বাঁচে পর্তুগাল। এ জয়ে গ্রুপের শীর্ষে চলে আসলো রোনালদোরা।