নয় মাসে ধর্ষণের শিকার ৮৩০ নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

চলতি বছরের গত নয় মাসে ৮৩০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে ‌নারী নিরাপত্তা জোট ও আমরাই পারি জোট। জোটের প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের কাছে উপস্থাপিত হয়েছে এক সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে। আর এই অর্জনের একটি বড় অংশ নারীর অবদান।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘নিঃশঙ্ক জীবন চাই : নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজের অঙ্গীকার চাই’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

জিনাত আরা হক বলেন, এই দেশে নারী ঘরে বাইরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ৯টি পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৮৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪১১ জন। পারিবারিক নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে ২৫৩ জন নারীকে। এছাড়া নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা করেছে ৭৯ জন। শুধু তাই নয়, এই ৯ মাসে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৪৮ জন নারী।

বর্তমান সরকারের আমলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিস্থিতি বিশ্লেষণে নারী ও শিশুর প্রতি সংহিতা দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও দাবি করেন জিনাত আরা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ৯টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা, বিচারকালে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু নিরাপত্তা ও চিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, সব প্রকার বৈষম্যমূলক আইন ও নারী নির্যাতনবিরোধী আইন সংশোধন করা এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।

সংবাদ সম্মেলনে নারী নেত্রীরা দাবি করেন, দেশে অধিকাংশ নারী নির্যাতনের মামলার তদন্তে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রভাবশালীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের মানুষের সঙ্গে কথা না বলে নিজের মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে।

তারা আরও বলেন, নির্যাতনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নারীর প্রতি নৃশংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা সম্ভব হয়নি। দোষীদের খুঁজে বের করা বা দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলেও তাদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা হয় না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, নির্যাতনের শিকার এক নারী আকলিমা খাতুন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মহুয়া লিয়া ফলিয়া প্রমুখ।

শেয়ার করুন