শাহজাহান সিদ্দিকী বীরবিক্রমের মৃত্যু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ঢাকা’র শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সাতমোড়া গ্রামের কৃতী সন্তান সাবেক সচিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সিদ্দিকী বীরবিক্রম ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। ২৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত পৌনে ১০টায় রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

universel cardiac hospital

জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীদের প্রাণের সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা’।

আজ(২৫ নভেম্বর) শুক্রবার সংগঠনের পক্ষে শোক প্রকাশ করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা-এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান।

শোক বার্তায় বলা হয়, শাহজাহান সিদ্দিকী বীরবিক্রমের মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো। দেশের প্রয়োজনে তাঁর বীরত্ব গাথা জাতি আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সিদ্দিকী বীরবিক্রম ১৯৪৭ সালের ২৭ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সাতমোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি মুরাদনগর থানার শ্রীকাইল কৃষ্ণকুমার বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন। পরে ১৯৬৭ সালে শ্রীকাইল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

১৯৭১ সালে শাহজাহান সিদ্দিকী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রথমে নিজ এলাকায় যান। পরে ভারতে যান। মে মাস থেকে তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তিনি পরে আরও কয়েকটি স্থানে সফলতার সঙ্গে অপারেশন করেন।

১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট শেষ রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত দাউদকান্দি ফেরিঘাটে পাকিস্তানিদের জাহাজ উড়িয়ে দেয়ার অভিযানে (‘অপারেশন জ্যাকপট’) যে আটজন নৌকমান্ডো অংশ নেন, তাঁদের দলনেতা ছিলেন শাহজাহান সিদ্দিকী। সফল অপারেশনের জন্য তিনি বীরবিক্রম খেতাবে ভূষিত হন।

স্বাধীনতার পর সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন শাহাজাহান সিদ্দিকী। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম বিসিএস এ এডমিন ক্যাডারে চাকরিতে যোগদান করেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ময়মনসিংহ, নীলফামার জেলার ডিসি, বাংলাদেশ বিনিয়র বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসর নেন।

পরবর্তীতে ডেসকো প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, গভর্নর ইসলামী ফাউন্ডেশন ও নির্বাচন কমিশনার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শেয়ার করুন