কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগের দিন সমালোচনাকারীদের ধুয়ে দিয়েছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে চাঁছাছোলা মন্তব্য করার পাশাপাশি নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, এবারের বিশ্বকাপই হতে যাচ্ছে সর্বকালের সেরা
চড়া দামের পরও নিজেদের জনসংখ্যার প্রায় সমান ৩০ লাখ টিকিট বিক্রি করে এরই মধ্যে নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়ে দিয়েছে কাতার। শুরুতে বিক্রি হওয়া টিকিটের বেশিরভাগই কিনে নেন কাতার, সৌদি আরব, মেক্সিকো, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ভারতের মানুষ। গ্রুপ পর্বের প্রথম রাউন্ডেই একাধিক অঘটন ঘটায় মাঠে বসে খেলা দেখার আগ্রহ আরও বেড়েছে।
টিকিট বিক্রিতে তরতর করে এগিয়ে যাওয়ার রেশ ধরে আরেকটি সুসংবাদ পেয়েছে কাতার। ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপ সম্প্রচারের শীর্ষে উঠে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ব্রাজিলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইউওএলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের ২২৫টি অঞ্চলের মানুষ টেলিভিশন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসে কাতার বিশ্বকাপ সরাসরি উপভোগ করছেন। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ দেখতে পেরেছেন ২২৩টি অঞ্চলের মানুষ। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে দেখা গেছে ২১২টি অঞ্চলে।
সম্প্রচার ও বাণিজ্যিক স্বত্ব বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৫ সালে ফিফার কয়েকজন পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ কারণে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে নতুন সম্প্রচার চুক্তি করা কঠিন হয়ে পড়েছিল ফিফার। সে ধাক্কা এবার বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে উঠেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। রেকর্ড ৫০০ কোটি মানুষ কাতার বিশ্বকাপ দেখছেন।
ইউওএলের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের ৫৬টি করে অঞ্চলে, পুরো আমেরিকার (উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য) ৫০টি, এশিয়ার ৪৩টি ও ওশেনিয়ার ২০টি অঞ্চলে কাতার বিশ্বকাপের সম্প্রচারস্বত্ব বিক্রি হয়েছে।
নির্দিষ্ট স্থানে সম্প্রচারস্বত্ব বিক্রির ক্ষেত্রে ফিফা সবার আগে অঞ্চলকে প্রাধান্য দেয়, দেশকে নয়। কারণ, বিশ্বে এমন কিছু অঞ্চল আছে, যেগুলো কোনো দেশের উপনিবেশ, ছিটমহল কিংবা অংশ হলেও স্বায়ত্তশাসিত নয়।
উদাহরণ হিসেবে ফ্রান্সের রেউনিওঁর নাম বলা যায়। এটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত একটি আগ্নেয় দ্বীপ। তবে আফ্রিকার জলসীমার অন্তর্ভুক্ত। ইউরোপের দেশ ফ্রান্স সেখান থেকেই রেউনিওঁকে নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও রেউনিওঁর নিজস্ব জাতীয় সংগীতও আছে। এ অঞ্চলে খেলা দেখানোর ক্ষেত্রে তাই ফ্রান্সকে আলাদা প্যাকেজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল ফিফা।
প্যাকেজ বিক্রির বেলায় আগের নিয়মই অনুসরণ করেছে ফিফা। তবে বিভিন্ন অঞ্চলের সম্প্রচার চ্যানেল ও ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে পরিবর্তন এসেছে। বিডে জিতেই এ স্বত্ব কিনে নিয়েছে তারা।
যেমন, ২০১৮ বিশ্বকাপ বাংলাদেশে সম্প্রচার করেছে বিটিভি, নাগরিক টিভি ও মাছরাঙা টেলিভিশন। এবার বিটিভি ছাড়াও খেলা দেখাচ্ছে টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি। আর অনলাইনে বিশ্বকাপ সম্প্রচার করছে টফি।