নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বিশ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ দশ দফা দাবিতে শনিবার দিনগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা।
কর্মবিরতির কারণে আজ রোববার সকাল থেকে সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলও। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ এ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে।
নৌযান শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ বছর পর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান থাকলে সর্বশেষ মজুরি কাঠামোর মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুনে শেষ হয়েছে। কিন্তু নৌযান মালিকদের সংগঠনগুলো বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। এছাড়া এ ১৬ মাসে নৌ মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বহুবার দেন-দরবার করেও ফল পাওয়া যায়নি।
গত সাত বছরে (৬ বছর ৪ মাস) কয়েক দফা দ্রব্যমূল্য বেড়েছে জানিয়ে শ্রমিক নেতারা বলেন, মজুরি-ভাতা বৃদ্ধি না হওয়ায় নৌযান শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এখন তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সাধারণ শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছে।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, দশ দফা দাবিতে রাত ১২টার পর থেকে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নৌযান মালিক ও সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। বিকেলের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাতে পারব।
ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে সকাল থেকে একটি ছাড়া আর কোনো লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছাড়েনি। সকালের দিকে ভোলার বেতুয়ার উদ্দেশ্যে টিপু লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পন্টুন খালি পড়ে আছে। সব লঞ্চ নদীর মধ্যে নোঙ্গর করে আছে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
২. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দিতে হবে।
৩. বাল্কহেডের রাত্রীকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে।
৪. বাংলাদেশের বন্দরসমূহ থেকে পণ্যপরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করতে হবে।
৫. চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করতে হবে।
৬. চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৭. কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৮. কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করতে হবে।
৯. বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ ভাগ কার্যকর করতে হবে।