২০২১ সালে জাপানে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল রাশিয়া, এফএসবির তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভ্লাদিমির পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি

২০২১ সালের আগস্টে জাপানে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল রাশিয়া। তবে কয়েক মাস পর মত পাল্টে ইউক্রেনে পুরোদমে অভিযান শুরু করে দেশটি। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এফএসবি) এক সদস্য এ তথ্য ফাঁস করেছেন। খবর নিউজ উইকের।

গত ১৭ মার্চ ভ্লাদিমির ওসেচকিন নামের এক রুশ মানবাধিকারকর্মীর কাছে পাঠানো এক ই-মেইলে এফএসবির এক কর্মী তথ্যটি ফাঁস করেছিলেন। ই-মেইলে একটি চিঠি যুক্ত করা ছিল। ভ্লাদিমির ওসেচকিন গুলাগু ডটনেট নামে দুর্নীতিবিরোধী একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন। বর্তমানে ফ্রান্সে নির্বাসনে আছেন তিনি।

universel cardiac hospital

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এ নিয়ে এফএসবির অভ্যন্তরে যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, সে সম্পর্কে নিয়মিত ওসেচকিনকে লিখে পাঠাতেন ওই কর্মী। ৪ মার্চ থেকে কয়েকটি ই-মেইল পাঠিয়েছেন তিনি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইন্ড অব চেঞ্জ রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইগর সুশকো রুশ ভাষায় লেখা সে ই-মেইলগুলো ইংরেজিতে ভাষান্তর করেছেন। ১৭ মার্চের ওই ই-মেইলসহ সব কটি ই-মেইলের ভাষান্তর তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সাময়িকী নিউজ উইককে দিয়েছেন।

এফএসবি-সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টো গ্রোজেভ ই-মেইলটি পর্যালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, চিঠিটি এফএসবির দুই কর্মীকে (বর্তমান ও সাবেক) দেখানো হয়েছিল। তাঁরা বলেছেন, এটি যে তাঁদের কোনো সহকর্মীর লেখা, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ফাঁস হওয়া ওই ই-মেইল থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের আগস্টে জাপানে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল রাশিয়া। তবে কয়েক মাস পর মত পাল্টে ইউক্রেনে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় মস্কো।

মার্চে ওসেচকিনকে পাঠানো ই-মেইলে এফএসবির ওই সদস্য লিখেছেন, জাপানের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে সামরিক সংঘাতে জড়ানোর জন্য রাশিয়া অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে কয়েক মাস পর রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে কেন যুদ্ধের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল, তা ওই এফএসবি কর্মী বলতে পারেননি।

যে শান্তিচুক্তির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান হয়েছিল, তাতে রাশিয়া ও জাপান কখনো স্বাক্ষর করেনি। জাপানের পক্ষ থেকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত একটি দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বিরোধ থাকায় তা করা হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন কুরিল দ্বীপপুঞ্জ এলাকার কুনাশিরি, ইতোরোফু, শিকোতান এবং হাবোমাই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

টোকিও দ্বীপগুলোর মালিকানা দাবি করে থাকে। এ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে রাশিয়া ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এফএসবির ওই সদস্য বলেছেন, মস্কো ও টোকিওর মধ্যকার বিরোধের মূল কারণ কুরিল দ্বীপপুঞ্জ। জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপ এবং রাশিয়ার কামচাতকা উপদ্বীপের মাঝামাঝি অবস্থানের কারণে ওই দ্বীপপুঞ্জ থেকে কিছু সামরিক ও রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ আছে।

শেয়ার করুন