ভারতে গুজরাট দাঙ্গার সময় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও পরিবারের সদস্যদের হত্যার অভিযোগে দোষী ১১ ব্যক্তির মুক্তির নির্দেশের বিষয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টকে চ্যালেঞ্জ করেছেন ভুক্তভোগী বিলকিস বানু। স্থানীয় সময় আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা পিটিশনে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, পিটিশনে বিলকিস বলেন, ‘গুজরাট নয়, মহারাষ্ট্র সরকার তাদেরকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বিলকিস বানুর পিটিশনের জবাবে বলেন, ‘আদালত বিষয়টি দ্রুতই শুনানির জন্য তালিকায় আনবে।”
১ ডিসেম্বর থেকে গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন শুরুর কথা রয়েছে। এর মাত্র একদিন আগে বিলকিস এ পিটিশন আবেদন করেন। এর আগে এক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানান, ১৯৯২ সালের মওকুফ নীতির আওতায় গুজরাট সরকার তাদের মুক্তির বিষয়টিকে বিবেচনায় নেয়। সুপ্রিম কোর্টের সেই আদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ১৫ আগস্ট আসামিদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে গুজরাট সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গার সময় বিলকিস বানু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ সময় তার পরিবারের ৯ সদস্যকে হত্যা করা হয়। ওই সময় বিলকিসের তিন বছরের কন্যা সন্তান সালেহাসহ ১৪ জনকে হত্যা করা হয়। আদালত এক আদেশে জানান, সালেহাকে হত্যার আগে তার মাথা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় বিলকিস পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। তিনি পরে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জানান, তাকে ধর্ষণ করা ১১ জনই তার আশপাশের প্রতিবেশী।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোকে’ (সিবিআই) ঘটনাটির তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। মামলাটি গুজরাট থেকে মহারাষ্ট্রের আদালতে স্থানান্তরিত হয়। ওই মামলায় আদালত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ১৭ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৯ সালে আদালত বিলকিসকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।