ভারতের গুজরাটে নির্বাচনী প্রচারে ‘বাংলাদেশি’ ও ‘রোহিঙ্গা’ নিয়ে কটূক্তি করে বিপাকে পড়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। তীব্র সমালোচনার মুখে আজ শুক্রবার সকালে টুইট করে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বিজেপির সাবেক এ সংসদ সদস্য।
গুজরাট রাজ্যের ভালসাদ জেলায় সম্প্রতি বিজেপির হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন পরেশ। সেখানে তিনি বলেন, গুজরাটিরা অনেক কিছু সহ্য করেন। তারা মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেবেন। কিন্তু ঘরের পাশে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের বসবাস মেনে নেবেন না। স্থানীয় গণমাধ্যমে পরেশের ভাষণ প্রকাশিত হয়।
আজ এনডিটিভি জানায়, লোকসভার সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেছিলেন, গ্যাসের দাম বেড়েছে। কিন্তু কমেও যাবে। লোকজন চাকরিও পাবে। কিন্তু কেমন লাগবে, যদি দেখেন দিল্লির মতো আপনার ঘরের পাশে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা বসবাস করছে? তখন রান্নার গ্যাস দিয়ে করবেনটা কী? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবেন?
কথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে বিজেপি অনেক দিন ধরেই সরব। বিশেষ করে ভোটের সময় অনুপ্রবেশ হয়ে দাঁড়ায় দলটির প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) লক্ষ্যও একই। এ ইস্যু ভারত তো বটেই, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের প্রশ্রয়দাতা। আম আদমি পার্টি গুজরাটে ক্ষমতায় এলে সেখানেও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন পরেশ।
দিল্লির মুখমন্ত্রীর উদ্দেশে পরেশ বলেন, উনি (কেজরিওয়াল) সারাক্ষণ হিন্দুদের গালিগালাজ করেন। শাহিনবাগের ধরনামঞ্চে তিনি বিরিয়ানি বিলি করেছিলেন।
পরেশের ভাষণের বিষয়বস্তু গণমাধ্যমে আসামাত্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে বলেন, বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে পরেশ আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। কেউ কেউ পরেশের নিন্দা করে তার কাছে জানতে চান, তিনি অহেতুক কেন মাছের প্রসঙ্গ টানলেন?
আজ পরেশ টুইট করে তার ভাষণের ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই মাছ ইস্যু নয়। কারণ, গুজরাটিরা মাছ রান্না করেন, খানও। তবে বাঙালি বলতে, আমি অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের বোঝাতে চেয়েছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি অন্যদের আহত করলে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।