স্বৈরশাসকরা বেয়নেটের খোঁচায় মানুষের ভাগ্য লেখেন: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর স্বৈরশাসকরা বুট ও বেয়নেটের খোঁচায় এ দেশের মানুষের ভাগ্য লিখতে শুরু করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জাতির পিতাকে হত্যা করে অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে সাধারণ মানুষের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার কেড়ে নেন।

তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃত করেন স্বৈরশাসকরা। আমি ও আমার বোন (শেখ রেহানা) বিদেশে অবস্থান করায় আমাদেরকে হত্যা করতে পারেনি। দীর্ঘ ছয় বছর আমাদেরকে রিফিউজি (শরণার্থী) হিসেবে বিদেশে অবস্থান করতে হয়েছে।

universel cardiac hospital

আগামীকাল ৩ ডিসেম্বর নব্বইয়ের গণঅভ্যূত্থান ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ, চাঁদপুরের বীর সন্তান জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মারকগ্রন্থ ‘সাহসিক’ প্রকাশ উপলক্ষে আজ শুক্রবার এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়ায় ‘শহীদ রাজু স্মৃতি সংসদের’ সবাইকে আন্তরিক অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু এ দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। পাকিস্তানি শোষকদের জেল-জুলুম-নির্যাতন তাঁকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ থেকে সরাতে পারেনি। তাঁর অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বতন্ত্র পরিচয় সৃষ্টি করেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন করে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন। তাঁকে হত্যা করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে সাধারণ মানুষের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার কেড়ে নেন স্বৈরশাসকরা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য লড়াই-সংগ্রাম শুরু করি। দেশে স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেই। গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কতো তাঁজা প্রাণ ঝরে পড়েছে হিসাব নেই। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী তুমুল আন্দোলন গড়ে ওঠে। এ আন্দোলনে অংশ নিয়েও বহু মানুষ প্রাণ বিসর্জন দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, শহীদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু স্মরণে প্রকাশিত এ গ্রন্থ গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠায় আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দলিল হিসেবে যুগে যুগে নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি শহীদ রাজুর ৩২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

শেয়ার করুন