ডাচদের টোটাল ফুটবলের দেশ কেন বলা হয়, সেটাই তারা আবারও প্রমাণ করলো কাতার বিশ্বকাপে। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে রানার্সআপ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের তৃতীয় হওয়া দলটি এবারও বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলো দাপট দেখিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো রকম ছাড় না দিয়ে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলো লুইস ভ্যান হালের দল। ডাচদের হয়ে দুটি গোল করেন মেমফিস ডিপে ও ড্যালি ব্লিন্ড।
বিশ্বকাপের শুরুর দিকের ম্যাচগুলোতে বদলি হিসেবে নামতে হয়েছিল বার্সা তারকা মেম্ফিস ডেপায়কে। কিন্তু নিজের জাত চিনিয়ে ঠিকই গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে তার অভিজ্ঞতাতেই ভরসা রাখেন ভ্যান হাল। কোচের সেই ভরসার প্রতিদান বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন মেমফিস ডিপে।
প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ শুরু করলেও পরের দিকে ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নিতে শুরু করে নেদারল্যান্ডস। খেলার দশম মিনিটে গোল আদায় করে নেওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকেন তারা। যদিও বল পজেশনে এগিয়েছিল মার্কিনিরা। ৩৭ শতাংশ বল দখল রেখেছে নেদারল্যান্ডস। আর যুক্তরাষ্ট্রের দখলে বল ছিল খেলার ৬৭ শতাংশ সময়।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ দারুণ দক্ষতায় রক্ষা করেন নেদারল্যান্ডস গোলরক্ষক আন্দ্রেস নোপার্ট। ম্যাচের দশম মিনিটে প্রথম গোল করে নেদারল্যান্ডস। মেমফিস ডিপের গোলে এগিয়ে যায় ডাচরা।
চলতি বিশ্বকাপে এটাই ডিপের প্রথম গোল। ডাম্পির অ্যাসিস্ট থেকে গোল করেন ডিপে। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে দ্বিতীয় গোল করে নেদারল্যান্ডস। মাত্র এক মিনিট ছিল ইনজুরি সময়। এসময়ই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ডাচরা। ড্যালি ব্লিন্ডের গোলে ২-০ ব্যবধানে থেকে বিরতিতে যায় নেদারল্যান্ডস।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধে মরিয়া হয়ে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের ৫০ মিনিটে ম্যাককেনিয়ের হেড দারুণভাবে রুখে দেন ডাচ গোলরক্ষক নোপার্ট।
এর ঠিক এক মিনিট পরেই নিশ্চিত আত্মঘাতী গোল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করেন জিমারম্যান। ৬১ মিনিটে ডিপের দারুণ শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক টার্নার।
ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে ৭৫ মিনিটেই যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে এক গোল শোধ দেন রাইট। বাম পাশ থেকে পুলিসিচের ক্রস থেকে পা ছুঁয়ে ব্যবধান কমান তিনি। কিন্তু এ গোলের আনন্দ বেশিক্ষণ টিকে থাকেনি যুক্তরাষ্ট্রের। ৮১ মিনিটে আবারও ঝলক দেখান ড্যালি ব্লিন্ড। এবার গোল না করে সতীর্থ ডামফ্রসিকে দিয়ে গোল করান তিনি।
শেষের দিকে আর কোনো গোল না হলে ৩-১ ব্যবধানেই ম্যাচ শেষ করে নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টারে জায়গা করে নেন তারা। সেখানে তারা অপেক্ষা করছেন আর্জেন্টিনা বা অস্ট্রেলিয়ার জন্য।