রাজধানী ঢাকায় মাঠ ছাড়া রাস্তাঘাটে সমাবেশ করার অনুমতি বিএনপি পাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া অন্য কোনো স্থানের নাম প্রস্তাব বিএনপি এখনো করেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে সমাবেশস্থল নির্ধারণ বিষয়ে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।
এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে সমাবেশের ভেন্যুর বিষয়ে আলোচনা করতে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে।
ওই বৈঠক শেষে ডিএমপির সদরদপ্তরের প্রধান ফটকের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেছিলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি নয়াপল্টনে সমাবেশ করবো। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে।
এর মধ্যে পুলিশ আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে চিঠি দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আজ (রোববার) আলোচনা করতে এসেছিলাম। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে আলোচনা করে এ বিষয়ে ঠিক করতে বলা হয়েছে। ভেন্যুর বিষয়ে আলোচনা তারা করবেন। আগামীকাল (সোমবার) থেকেও এ আলোচনা চলতে পারে। এরপরই ভেন্যু চূড়ান্ত হবে।
তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নয়াপল্টনেই করার দলীয় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে পুলিশের তল্লাশি চৌকি, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি, আমার বাসা ঘেরাও সবই একইসূত্রে গাঁথা। বাসা ঘেরাও করে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ দমানো যাবে না। সমাবেশ বানচাল করতে ভয় পেয়ে সরকার এসব করছে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের অনুমতি না পেয়ে বিএনপি এখন সমাবেশের জন্য নতুন ভেন্যু খুঁজছে।
তিনি বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে বিএনপিকে নতুন ভেন্যুর প্রস্তাব দেয়নি। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছি। তারাই নতুন ভেন্যুর কথা বলছে। তবে আমরা আশা করি, বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই তাদের সমাবেশটি করবে।
তিনি আরও বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্যানটি নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। আমরা বিএনপিকে অনুরোধ করেছি, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার জন্য। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে যত ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতা করার দরকার সব পদক্ষেপ আমরা নেবো।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত ১৫ নভেম্বর পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেয় বিএনপি। তবে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টির কারণ দেখিয়ে গত ২৯ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিএনপিকে দেওয়া অনুমতিপত্রে সমাবেশের জন্য ২৬টি শর্ত জুড়ে দেয় ডিএমপি। তবে বিএনপির নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে বলে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে।
গতকাল রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া ঢাকার ভেতরে সমাবেশের জন্য বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনা করা হবে।