চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ভারতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ৫১১টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এক বছরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এতো হামলার ঘটনা এর আগে ভারতে ঘটেনি। ২০২১ সালে ৫০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ভারতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের মিলিত পরিষদ ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম (ইউসিএফ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকার।
ইউসিএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপরে হামলার ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে ১৪৮টি হামলার ঘটনা ঘটে, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৫১১। এ বছর তিনটি রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যগুলো হলো- উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড় ও ঝাড়খন্ড।
উত্তর প্রদেশে ১৪৯ হিংসার ঘটনা ঘটে, ছত্তিশগড়ে ঘটে ১১৫ ও ঝাড়খন্ডে ৪৮টি। তিন রাজ্যের মধ্যে উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় আছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস এবং ঝাড়খন্ডে আদিবাসী সম্প্রদায়ের দল ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন স্থানে কোনো প্ররোচনা ছাড়া উত্তেজিত জনতা উপাসনাস্থলে ঢুকে প্রার্থনারত খ্রিষ্টানদের ওপর আক্রমণ করছে, বা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে কোনো কারণ ছাড়া রাস্তায় বা কোনো স্থানে আক্রমণ করা হচ্ছে।
অনেক জায়গায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে যে, তারা মানুষকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছেন। যদিও এ অভিযোগ প্রায় সব ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত মিথ্যা বলে প্রমাণিত হচ্ছে। ভারতের ছয়টি রাজ্যে ধর্মান্তরবিরোধী আইন আছে। সেখানে ধর্ম পরিবর্তনে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ৭৯টি ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। এ অভিযোগের জেরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বহু মানুষ কারাগারে আছেন।
এমনকি আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেননি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদালত থেকে জামিন পেলেও প্রশাসন নানা কারণ দেখিয়ে তাদেরকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়নি বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিংসায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং খ্রিষ্টান সংগঠনের প্রতিনিধিরা অভিযোগ জানাতে গেলে তাদেরকে হেনস্তা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সর্বস্তরে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন ইউসিএফের সভাপতি মাইকেল উইলিয়াম। হিন্দুদের পরে ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। খ্রিষ্টানদের সংখ্যা মাত্র আড়াই শতাংশ। মুসলিম সম্প্রদায় ১৫ শতাংশ।