লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এর ঠিক পরপরই ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে তাকে আটক করে পুলিশ।
যদিও ক্ষমতা হারানোর পর এখন কাস্টিলো মেক্সিকোতে আশ্রয় চাইছেন। অন্যদিকে তাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিও। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পেরুর সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে মেক্সিকো। ৫৩ বছর বয়সী কাস্টিলো এখন পেরুর রাজধানী লিমাতে বন্দি আছেন। তার আশ্রয়ের আবেদনটি আইনজীবীর মাধ্যমে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিবিসি বলছে, পেদ্রো কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে দুই দেশ এখন আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড।
মূলত পেদ্রো কাস্টিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিশংসনের প্রস্তাব এনেছিলেন দেশটির আইনপ্রণেতারা।। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন।
সেসময় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, অস্থায়ীভাবে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুষ্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা। এরপর পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডেকে তাকে অভিশংসিত করা হয়।
এছাড়া অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই মেক্সিকোর আশ্রয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন পেদ্রো। তবে তার দেহরক্ষীরা তাকে রাজধানী লিমার মেক্সিকান দূতাবাসে আশ্রয় নিতে বাধা দেয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে।
৬০ বছর বয়সী দিনা পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোরকে বুধবার রাতে চিঠি পাঠান কাস্টিলোর আইনজীবী। ওই চিঠিতে তাকে ‘বিচার ব্যবস্থার ভিত্তিহীন নিপীড়নের মুখে কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য’ অনুরোধ করা হয়েছে।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ডের মতে, পেরুতে নিযুক্ত মেক্সিকান রাষ্ট্রদূত পাবলো মনরয় লিমাতে কাস্টিলোর সাথে দেখা করেছিলেন। তার ভাষায়, ‘তাকে (কাস্টিলো) তার আইনজীবীর সাথে ভালো অবস্থায় আছেন।’