রাজধানী ঢাকার নয়া পল্টনে বুধবার বিএনপির কর্মী-সমর্থদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা কোনও ধরনের সংঘাত চাই না। অনেকের ইচ্ছে একটা লাশ পড়ুক। লাশ পড়লে ওরা খুব খুশি হয়। কারণ, তখন পাবলিক সেন্টিমেন্ট পাওয়া যায়। ঘটনাটি ঢাকায় ঘটার আগেই এটা ওয়াশিংটনে চলে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের ইনানি বিচে একটি অনুষ্ঠান শেষে এক সেমিনারের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে কতগুলো প্রাইভেট টেলিভিশন রয়েছে। নো ওয়ান ইজ আন্ডার প্রেসার। আমি কিছু দিন আগে কপ-২৭-এ মিসরে গিয়েছিলাম। শুনেছি, ওখানে সরকারের কথা ছাড়া কেউ কোনও কথা বলতে পারে না। বাংলাদেশ ইজ নট লাইক দ্যাট। তবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের একটা কারণ হচ্ছে আমাদের একজন সাংবাদিক, উনি এটা উসকে দেন।
ওই সাংবাদিকের নাম জানতে চাইলে মন্ত্রী তা খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, যে সাংবাদিক, হোয়াইট হাউজ এবং জাতিসংঘ দুই জায়গাতেই ওনার এক্সেস আছে। বাংলাদেশে কিছু হলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন। প্রশ্ন করার ফলে উনি উত্তর দেন। উত্তরটা উনি (সাংবাদিক) লিখেও দেন। অনেক সময় উনি আগেভাগে লিখেও দেন, টেক্স করেন- আমি এটা প্রশ্ন করবো, আর এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণেই বোধহয় ইউএসএ সো প্রম্পট।
তিনি বলেন, তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) যেটা চায় যেকোনও সংঘাত না হোক, আমরাও (সংঘাত) চাই না। উই উইল মেইনটেইন মেক্সিমাম রিস্ট্রেইন। তবে আমেরিকায়ও রাস্তায়, হোয়াইট হাউজের সামনেও বড় জনসভায় আমেরিকান সরকার রাজি হবে না। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের রাস্তায় সভা করার ক্ষেত্রে দে উইল নট অ্যালাউ। দেয়্যার ইজ অ্যা রুল, সিস্টেম। আমরা আমাদের পথচারীদের বাধা দিতে চাই না, বিঘ্ন দিতে চাই না। তারা (বিএনপি) ডেমোনস্ট্রেশন করতে চান, সম্মেলন করতে চান। নিশ্চয়ই হলের ভেতরে করতে পারেন, মাঠের মধ্যেও করতে পারেন। গভর্নমেন্ট ইজ উইলিং, কারণ বাংলাদেশের সব লোকের কথা বলার অধিকার আছে।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রত্যেক দিন অপজিশনের লোক কন্টিনিউয়াসলি সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের কথাবার্তা বলছেন, বানোয়াট তথ্য দিচ্ছেন। সরকার এজন্য কখনও কাউকে আক্রমণও করেনি। যে যা বলে বলবে। বলে যাচ্ছেও তো। ইউটিউবে যদি বক্তৃতাগুলো শোনেন, টকশো দেখেন, টেলিভিশন দেখেন– গভর্নমেন্ট কি কাউকে বারণ করেছে কখনও? অনেক সময় মিথ্যা কথা বলে যে বারণ করেছে। নো ওয়ান। কাউকে বারণ করেনি। উই বিলিভ ইন ফ্রিডম অব স্পিচ। বাংলাদেশের মতো এত ফ্রিডম খুব কম দেশেই আছে।
নিজেদের নাগরিকদের চলাচলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক বার্তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে দিয়েছিল ব্রিটিশরা। আপনিই বলেন, দেশের অবস্থা কি খারাপ? দেশের অবস্থা মোটেই খারাপ না। এটা আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কেউ কেউ দিয়ে থাকেন। যারা দিয়ে থাকেন তারা কোনও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কোনও কাজকর্ম করছেন কিনা, উই ডোন্ট নো। আমরা জানি না। আমাদের ইনফরমেশন অনুযায়ী দেশে কোনও আতঙ্কের সম্ভাবনা নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ যদি শোভাযাত্রা করতে চায় দে আর মোস্ট ওয়েলকাম। বাট দে হ্যাভ টু ফলো দ্য রুল অ্যান্ড লিগ্যাল প্রসেস। যুক্তরাষ্ট্রেও আপনি কোনও মিটিং করতে পারবেন না… ১০০ জনের বেশি যদি হয় পারমিশন লাগবে। সুতরাং ওদের রুলস আরও কঠিন। রাজনৈতিক কারণে কাউকে সরকার গ্রেফতার করে না। যদি কেউ পাবলিক প্রোপার্টি নষ্ট করে, যদি কেউ প্রাইভেট প্রোপার্টি জ্বালায়-পোড়ায়, তখন কিন্তু সেই তাকে অ্যারেস্ট করে। নট বিকজ পলিটিশিয়ান অ্যান্ড দেয়ার অ্যাক্টিভিস্ট। সে একটা পাবলিক প্রোপার্টি নষ্ট করেছে সেই জন্য। এটা ক্রিমিনাল অ্যাকশন হলে আপনাকে গ্রেফতার করে। আপনার ওপিনিয়নের জন্যে কাউকে গ্রেফতার করে না।