বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বিপজ্জনক স্তরে নেমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা ঠেকাতে সৌদি আরবের কাছে জরুরি ভিত্তিতে ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত নাওয়াফ বিন সাঈদ আল মালকির সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার। সেই বৈঠকেই এই অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
কোনো দেশের ন্যূনতম অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম প্রাথমিক শর্ত হলো— ওই দেশের রিজার্ভে অন্তত ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের মজুত থাকতে হবে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ মাত্র ৬৭০ কোটি ডলার। অর্থাৎ দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো অর্থও এখন আর নেই দেশটির।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের ডলারের রিজার্ভ ছিল ৬৬০ কোটি ডলার। তার তিন বছর পর ফের এই সংকটে পড়ল দেশটি। এদিকে আগামী বছর জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে আন্তর্জাতিক ঋণ ও সুদের কিস্তি বাবদ ৮৮০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে পাকিস্তানকে।
গত বছর পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত হিসেবে ৩০০ কোটি ডলার জমা রেখেছিল সৌদি আরব। সেই টাকা এখনও রাখার জন্য বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী।
বছরের পর বছর ধরে চলা সামরিক শাসন, অব্যবস্থাপনা-অনিয়ম, সামরিক-সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের দুর্নীতির কারণে গত দশক থেকেই টালমাটাল অবস্থায় ছিল পাকিস্তানের অর্থনীতি। করোনা মহামারির দুই বছরে এই সংকট আরও গভীর হয়েছে।
গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, শিগগিরই চীনের কাছ থেকে ৮৮০ কোটি এবং সৌদির কাছ থেকে ৪২০ কোটি— মোট ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে দেশটি।
তবে অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এই ঋণপ্রাপ্তির ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতিই তো হয়ইনি, উপরন্তু গত মাসে পূর্ববর্তী ঋণের কিস্তি বাবদ চীনকে ১২০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই সৌদি সফরে যাবেন নতুন সেনাপ্রধান আসিম মুনির। সেই সফরে আরও সহায়তা নিশ্চিত করতে সৌদি সরকারের সঙ্গে বৈঠক করারও কথা আছে তার।