গত সপ্তাহে লেনদন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এতে সপ্তাহ শেষে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে, তার প্রায় চারগুণ প্রতিষ্ঠানের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। ফলে এক সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন এক হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে চলে এসেছে তিনশ কোটি টাকার ঘরে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকা।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৫টির। আর ২৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ১৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩০ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৯ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২১ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৬ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২০ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। কিছুদিন আগে যেখানে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে, সেই লেনদেন এখন নেমে এসেছে তিনশ কোটি টাকার ঘরে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪০৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৯৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৩৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৪৮৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আমরা নেটওয়ার্কের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ৬৯ কোটি ৫৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইস্টার্ন হাউজিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মুন্নু সিরামিক, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং এডিএন টেলিকম।