চিকিৎসা বর্জ্য বিধিমালা অনুযায়ী বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য ছয়টি নির্দিষ্ট রঙের পাত্র রাখার কথা থাকলেও ৬০ শতাংশ হাসপাতালে এমন পাত্র নেই বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা জরিপে উঠে এসেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করতে পরিচালিত জরিপটি আজ মঙ্গলবার ওয়েবিনারে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা যায়, হাসপাতালের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে বর্জ্যকর্মী কর্তৃক সব ধরনের বর্জ্য একই পাত্রে সংরক্ষণ করে। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪৫টি জেলার ৪৭টি নির্বাচিত সিটি করপোরেশনে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের উপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছে চিকিৎসা বর্জ্যকর্মীদের ৫৫ শতাংশ। মাত্র ২৯ শতাংশ চিকিৎসা বর্জ্যকর্মী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া। হাসপাতাল, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে বর্জ্যকর্মী নিয়োগে বিধিবহির্ভূত আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এবং নিয়োগভেদে লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রয়েছে চিকিৎসা বর্জ্যকর্মীর বেতন প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। কাগজে-কলমে আইন করা হলেও এখানে বিভিন্ন অরাজকতা আছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবও এ লক্ষণীয়। ১৪ বছরেও বিধি বাস্তবায়ন করে কর্তৃপক্ষ গঠন হয়নি, যার কারণে ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮ এর ১৪ বছর হয়ে গেলেও তা কার্যকর নয়। কারণ, কর্তৃপক্ষ গঠনের দায়িত্ব কার উপর ও কার কাছে জবাবদিহি করবে, এমন কোনো নির্দেশনার কথা সেখানে উল্লেখ নেই। সিটি করপোরেশনগুলো কিছু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিলেও তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব কারও উপরে নেই।