২০১৮ বিশ্বকাপে রানার্সআপ হওয়ার পর কাতার বিশ্বকাপেও ভালো খেলার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তৃতীয় স্থান অর্জন করলো ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আফ্রিকার গর্ব মরক্কোকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে মদ্রিচ-কোভাচিচরা। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে গোল দুটি করে জিভার্ডিওল ও ওরসিচ এবং মরক্কোর হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আশরাফ দারি।
দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে দুই দলই। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হেরেছে ক্রোয়েশিয়া এবং ফ্রান্সের কাছে হেরে বসে মরক্কো। তাই দুই পরাজিত দলের লড়াইটা যে হাড্ডাহাড্ডি হবে সেটা অনুমেয়ই ছিল। ম্যাচের সবগুলো গোলই আসে প্রথমার্ধে।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা। দুই দলই ওপেন নেটে খেলতে শুরু করে। বল দখলের লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়েছিলো ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই দুর্দান্ত এক হেডে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন জসকো জিভার্ডিওল।
এ সময় বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পেয়েছিলো ক্রোয়েশিয়া। মদ্রিচ গোলে শট না নিয়ে বক্সের মধ্যেই বাতাসে বলটা তুলে দেন। পোস্টের বাম পাশে হেড করেন ইভান পেরিসিচ। সেখান থেকে ভেসে আসা বলে আবারও হেড করে মরক্কো গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোকে ফাঁকি দিয়ে গোল করেন জিভার্ডিওল।
২ মিনিট পর, খেলার ৯ম মিনিটে আবারও গোল। এবার গোল দিলো মরক্কো। ঠিক একইভাবে। অর্থ্যাৎ ফ্রি-কিক থেকে ভেসে আসা বলে। হাকিম জিয়েচ ডান পাশ থেকে কিক নেন। খুব জোরালো ছিল না কিকটা। তবে মাজের বলটি পেয়ে পোস্টের মধ্যে রাখেন। সেখানে দৌড়ে এসে আশরাফ দারি দারুন এক হেডে ক্রোয়েশিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন।
১-১ গোলে সমতায় আসার পর দুই দলই আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে এসে খেলেছে। অনেকগুলো গোলের সুযোগও তৈরি করেছে। কিন্তু গোল পায়নি। তবে ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে মিস্লাভ ওরসিচ গোল করে এগিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়াকে। তার শটটি গোলরক্ষক বোনোর মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে সাইডবারে লেগে জালে প্রবেশ করে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আরো গোলের প্রচেষ্টা শুরু করে ক্রোয়েশিয়া। ৪৭ মিনিটে ওরসিচের দুর্দান্ত শট মরক্কোর ডিফেন্ডার ইয়ামিকের পায়ে লেগে বাইরে না গেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেয়ে যেত তারা।
বল দখলে মরক্কো বেশ এগিয়ে থাকে ক্রোয়েশিয়ার থেকে। মরক্কোর আক্রমণগুলো প্রায় সবই বারবার প্রতিহত হচ্ছিল ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্সের কাছে।
৭৪ মিনিটে জিভার্ডিওলকে ডিবক্সের ভেতর ফাউল করে ফেলে দেন আমারাবাত। কিন্তু রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি। যদিও পরে রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে রেফারি চাইলে সেটি পেনাল্টি দিতেও পারতেন। এর ঠিক ১ মিনিট পরে দুর্দান্ত সেভ করে দলকে ম্যাচে এগিয়ে রাখে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ।
কাতার বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলা লিভাকোভিচ এন-নাসিরির শর্ট রেঞ্জে নেওয়া বা পায়ের শট দারুণভাবে রুখে দেন। ৮৭ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন স্টানিসিচ। কিন্তু তার বা পায়ের ক্রস শট চলে যায় গোলবার ঘেষে। ম্যাচের শেষের দিকে মরক্কোর এন-নাসিরি লাফিয়ে উঠে হেড করলে সেটি জাল ঘেষে চলে গেলে বিশ্বকাপে চতুর্থ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো মরক্কোকে।