আমরা যুদ্ধ চাই না, সেংশন চাই না: প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা কোনো সেংশন চাই না, এগুলো বন্ধ করুন। সকল দেশ স্বাধীন, স্বাধীনভাবে তার চলার অধিকার আছে, এই অধিকার সকলের থাকতে হবে।

শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ মানুষের ক্ষতি করে। যুদ্ধের ভয়াবহতা কী আমরা তা জানি; একাত্তরে বন্দিখানায় ছিলাম, আমার প্রথম সন্তান জয় ঐ বন্দিখানায় জন্মগ্রহণ করে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাহিনী গোটা পরিবারকে মাত্র একটি কম্বল দিয়েছিল।

তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশুরা। তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, এজন্য আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি বিশ্বনেতৃত্বের কাছে আহ্বান করব, আপনারা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করুন। তাদেরকে উসকানি দেওয়া বন্ধ করুন।

শেখ হাসিনা বলেন, জীবন থাকতে দেশের এতটুকু স্বার্থ নষ্ট হবে না। দেশ কারো হাতে তুলে দেব না।

১৯৯৬ সালে ভোট চুরি করে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিল বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয় না। বিএনপিকেও ছাড়েনি। তাদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামায় জনগণ। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দেয়।

২০০৮ সাল থেকে পরপর তিনবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে পৃথিবীর মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় যেতে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিল খালেদা জিয়া। বর্তমানে ভোটার আইডি স্মার্ট করা হয়েছে। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুর সন্তান দুর্নীতি করে টাকা আয় করতে ক্ষমতায় আসেনি বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি করে টাকা আয় করতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে বিদ্যুতের কথা বলে খাম্বা দিয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৫ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে গেছে। দেশের প্রতিটি ঘরে আলো পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।

আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চলবে ই-গভর্নেন্স (ইলেকট্রনিক গভর্নেন্স) পদ্ধতিতে। এমন তথ্য জানিয়ে সরকারপ্রধান, বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশ আগামীতে ই-গভর্নেন্স পদ্ধতিতে চলবে। শিক্ষা ও সরকারসহ সকল কাজ হবে হবে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে।

এ জন্য তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে ইতোমধ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এছাড়া বর্তমানে দেশের তরুণরা ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে আয় করছে। তাদের প্রশিক্ষণ, সনদ ও সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছে সরকার।

দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে মানুষের চাষের কোনো জমি খালি না রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যার যেটুকু জমি আছে চাষ করুন। আমাদেরটা আমরা খাবো কারো কাছে হাত পাতবো না। মানুষের যে কোনো দুর্যোগে আওয়ামী লীগ পাশে ছিল। এখনো আছে।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এর আগে সম্মেলন মঞ্চে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’- এই স্লোগানে আয়োজিত হচ্ছে এবারের কাউন্সিল।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সেই সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের।

শেয়ার করুন