দুই পরাশক্তির পাল্টাপাল্টির রেশ এবার ঢাকা ছাড়িয়ে মস্কোয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি আর বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে সীমিত থাকল না। এবার এর রেশ মস্কো পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিষয় তুলে মস্কোয় বসে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মস্কোর স্থানীয় সময় অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা শিরোনামে বিবৃতি দেন।

universel cardiac hospital

মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার-গণতন্ত্রবিষয়ক প্রতিবেদন, আফগানিস্তানে যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর অপরাধের তদন্ত, তুরস্কে খুন হওয়া রুশ রাষ্ট্রদূতের মৃত্যুবার্ষিকীসহ অন্যান্য বিষয়ও উঠে আসে। এ বিবৃতি আজ রোববার সকালে প্রচার করেছে ঢাকার রুশ দূতাবাস।

মস্কোর দৃষ্টিতে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের কী ভূমিকা এবং ইউরোপে তার প্রভাব কেমন, তা তুলে ধরতে টুইটারে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে ঢাকায় রুশ দূতাবাস

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস হত ১৪ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর শাহীনবাগে প্রায় এক দশক ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে একদল লোক তাকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ঘটনাটি মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার প্রত্যাশিত ফল। যিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের মানবাধিকার সুরক্ষার নামে ক্রমাগত দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি তার যুক্তরাজ্য ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনের সহকর্মীরা একই লক্ষ্যে যুক্ত থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে খোলামেলাভাবে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

মারিয়া জাখারোভো প্রশ্ন করেন, ‘কেউ যদি জানতে চান, কূটনীতিক, দায়মুক্তি, দূতাবাস, নিরাপত্তা—শব্দগুলো কেমন হবে? আমরা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পর্কে ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী এই বিষয়গুলো অনুসরণের আহ্বান জানাই। এটাই যে মূলনীতি, সেটাই সত্য। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশগুলোকে শুধু তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যত্নবান ও মন্তব্য করার জন্য বলব না, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশ ও তাদের প্রতিনিধিরা যখন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, তখন তাদের সহকর্মীদের সমর্থন করার আহ্বান জানাই।’

শেয়ার করুন